অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। আজ রোববার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, চলতি বছর বন্যার ফলে ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে পেঁয়াজের উৎপাদন খুবই কম হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তেই থাকে। দিল্লির খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ রুপিতে, যা এক মাস আগেও ২০ থেকে ৩০ রুপি ছিল। ভারতের কোনো কোনো এলাকায় পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকাতেও গিয়ে ঠেকেছে।
শুধু তাই নয় পেঁয়াজের পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়।
ভারত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে, যার একটি বড় অংশ এসেছে বাংলাদেশে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে পড়ে ঠিক পরদিনই। ওই খবরে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে যায় ২০ থেকে ২৫ টাকা।!
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রিও শুরু করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ।
টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে রোববার প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ১৭ থেকে ১৯ লাখ মেট্রিক টনের মত। দেশীয় উৎপাদনে চাহিদা পূরণ না হওয়ায় আমদানি করতে হয় ৭ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন। যার বেশিরভাগটাই আমদানি হয় ভারত থেকে।
এর আগে দেশের চাহিদা পূরণে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার, মিশর ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলার কথা বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন এক সপ্তাহ জানিয়ে বলেছিলেন, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, দাম দ্রুত কমে আসবে। এরই মধ্যেই রোববার ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের এ ঘাষণা এল।