সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকতা নিয়ে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের চিঠিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ।
সোমবার (২৪ জুন) এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করে দেওয়া এমন বিবৃতি সমাজে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকির পরিবেশ তৈরি করে।
সম্প্রতি দেশের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার অস্বাভাবিক সম্পদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দেশের সব গণমাধ্যমের সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়েছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
এই চিঠিতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন ও সাংবাদিকতার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণের কথা বলা হয়েছে যা সরাসরি সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ। ব্যক্তির দায় কোনো বাহিনীর নয় বলা হলেও এখানে সরাসরি ব্যক্তির দায়ই পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নিলো।
গিল্ড মনে করে, মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ত্যাগ, জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের সাহসী ভূমিকা, যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির আক্রমণ, করোনার সময় পুলিশের মানবিক আচরণসহ যাবতীয় ইতিবাচক কাজ গণমাধ্যমে সবসময়ই প্রকাশিত হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীল পদে কর্মরত থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এমন সম্পদ অর্জন হলে তার তথ্য অনুসন্ধান করে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তা প্রকাশের কাজটিও নিশ্চয়ই করবে গণমাধ্যম।
আর বড় কথা এই যে, বিষয়গুলো নিয়ে এখন সরকারি সংস্থাগুলোই তদন্ত করছে।
এডিটরস গিল্ড মনে করে, এসব প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে প্রতিবাদ দিতে পারেন, প্রেস কাউন্সিলেও অভিযোগ করতে পারেন। কিন্তু ঢালাওভাবে দোষারোপ করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যে বক্তব্য দিয়েছে তা স্বাধীন গণমাধ্যম ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা চর্চার প্রতি অযৌক্তিক ও অশোভন আক্রমণ।
বিবৃতিতে, একটি সুশাসিত গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণে গণমাধ্যম যেন অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও দৃঢ় ভূমিকা রাখতে পারে সে জন্য পুলিশ বাহিনী সহ সরকারি সকল সংস্থার সহযোগিতা কামনা করা হয়।