শেরপুরের ঝিনাইগাতী অতিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি সামান্য উন্নতি হয়েছে। ২ অক্টোবর সোমবার সকালে প্লাবিত উপজেলা সদর বাজারসহ উজান এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে তা ভাটিতে প্রবেশ করে নিন্মাঞ্চলের কমপক্ষে ১০টি গ্রাম এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত প্লাবিত রয়েছে। প্লাবিত গ্রামগুলো হচ্ছে- সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, বালিয়াগাঁ, ঝিগাতলা চতল, লঙ্কেশ্বর, নয়াপাড়া, দক্ষিণ দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, হাঁসলিবাতিয়া। ওইসব গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে ওই পরিবারগুলোর খাবারসহ গবাদী পশুর খাবারের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে রয়েছে ও বিপুল সংখ্যক পুকুর ভেসে গেছে। এতে কৃষকেরা তিগ্রস্তও হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে টানা দশ ঘন্টা উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবল বেগে মহারশি নদীর রামেরকুড়া এলাকার বেড়িবাঁধের পুরোনো ভাঙ্গা অংশ দিয়ে সদর বাজারে প্রবেশ করে। এতে সদর বাজারের তিন শতাধিক দোকানপাটে পানি প্রবেশ করায় ১২ঘন্টা বন্ধ থাকে। তবে এখন বাজারের পানি নেমে যাওয়ায় স্বাভাবিকতা ফিরে পেয়েছে বাজারের অবস্থা। কিন্তু নিন্মাঞ্চল এখনো প্লাবিত রয়েছে।
উপজেলা গৌরিপুর ইউনিয়নের বনগাঁও চত্তল গ্রামের সমশের ও মোক্তার মিয়া জানান, পাহাড়ী ঢলের পানি প্রবেশ করে তাদের বসতঘরের ভিটা ডুবে থাকায় রান্না বন্ধ রয়েছে। ফলে তারা ঘরে থাকা শুকনা খাবার খেয়ে রয়েছে। গবাদী পশুর চিৎকারে খাবারের সন্ধানে উচুঁ জায়গা খুঁজতেছেন।
এদিকে বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন জানান, সদর বাজারে পাহাড়ী ঢলের পানি প্রবেশ করায় প্রায় ২৫০টি দোকানের ১ কোটি টাকার মালামাল য়তি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়জুন্নাহার জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে প্রায় ১৫শ’ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত রয়েছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পানি নেমে যাওয়ার পর বলা যাবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম জানান, পাহাড়ী ঢলের পানিতে ১২৩ একরের ৩৫০টি পুকুর ভেসে অবকাঠামোসহ প্রায় ৯০লাখ টাকার তি হয়েছে।
ধানশাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.শফিকুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, প্লাবিত এলাকার রোপা আমন ধান নিমজ্জিত ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোর দুর্ভোগ ও ভোগান্তি নেমে এসেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা করিম বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রেডক্রিসেন্ট পানিবন্দি পরিবার গুলোর মাঝে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত সরে যাবে বলে আশা করা যায়।
শেরপুর টাইমস/ বা.স