তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নৌপথে পণ্য পরিবহন সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব। তাই নৌপথে আমাদের পণ্য পরিবহন বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের নদীগুলোর নাব্যতাও ঠিক থাকবে। নদীর নাব্যতা ঠিক থাকলে তখন বন্যা হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। কারণ নদীর যখন পানি ধারণক্ষমতা কমে যায়, তখন সেটি দুই কূলকে প্লাবিত করে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, গত কয়েক বছর দেশে তীব্র কোনো বন্যা হয়নি। এটির অন্যতম প্রধান কারণ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১০ বছর ধরে দেশের প্রধান নদীগুলো ড্রেজিং করা হচ্ছে। তাই এখন আর আগের মতো বড় বড় বন্যা হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চিটাগাংয়ের (আইভোয়াক) উদ্যোগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন নৌবন্দর/গন্তব্যে পণ্য পরিবহন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইভোয়াকের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবী এখন গ্লোবাল ভিলেজ। যেমন রটারডাম বন্দর দিয়ে কিংবা বেলজিয়ামের এন্টওয়ার্প বন্দর দিয়ে পুরো ইউরোপে বিভিন্ন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য হয়। ঠিক তেমনি এখানে বে-টার্মিনাল যখন নির্মাণ হবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পুরোপুরি চালু হবে। তখন পুরো অঞ্চলের আমদানি-রপ্তানি পণ্যগুলো এসব বন্দর দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাবে। যেমন এখন ইউরোপ থেকে কোনো কার্গো এলে সেটি প্রথমে সিঙ্গাপুর যায়, আবার সিঙ্গাপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। তখন এটি আর হবে না, তখন চট্টগ্রামে আসবে কিংবা মাতারবাড়ীতে আসবে। এরপর এখান থেকে মিয়ানমার কিংবা ভারতের বিভিন্ন ছোটখাটো বন্দরে যাবে। তখন লাইটার জাহাজের ব্যবহার আরও বেড়ে যাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম ঘিরে যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ করে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। এই শিল্পনগর যখন পুরো উদ্যোমে চালু হবে তখন সেখানে কমপক্ষে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আগামী বছর বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মিত হবে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তাদের সব ধরনের সেটআপ শেষ। নির্বাচনের পর আগামী বছরের মার্চ মাসের দিকে তারা উৎপাদনে যাবে। আরও অনেক শিল্প কারখানা উৎপাদনে যাবে। বেশ কয়েকটি ইতোমধ্যে উৎপাদনে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেললাইন গেছে। আমি উন্মুখ হয়ে আছি কখন এই রেললাইন হয়ে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে কক্সবাজার যাব। এসব উদ্যোগ এবং বাস্তবায়ন মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতে ব্যবসা বাণিজ্য আরও বাড়বে। কারণ এখন আমরা জিডিপিতে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ এবং ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে আমরা পৃথিবীর ৩১তম দেশ। আজ থেকে ১৫ বছর আগে আমাদের জিডিপির সাইজ ছিল ৮০ মিলিয়ন ডলার। আজকে আমাদের জিডিপি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার। আগামী ১০ বছরের মধ্যে এটি দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হবে। তখন ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে। কার্গো চলাচলও অনেক বাড়বে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ পেলেই জিনিসপত্রে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের একটি পত্রিকায় খবর এলো আর সেটির সূত্র ধরে বাংলাদেশের একটি পত্রিকা খবর ছাপাল মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করছে ভারত। এই সংবাদের এক ঘণ্টার মধ্যেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল। খুচরা বিক্রেতারাও দাম বাড়িয়ে দিল। এটি কারসাজি ছাড়া অন্য কিছু নয়। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের সবার। তাই নিজের কল্যাণের পাশাপাশি দেশের কল্যাণের চিন্তাও করতে হবে।