নেত্রকোনার মদনে চুরির অপবাদ দিয়ে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (জুলাই) সকালে শিশুটির চাচা এমদাদুল হক বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন।
এতে তিনজনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামের মো. কাজল মীর, তার ছেলে মো. হুমায়ুন মীর (২৫) ও সুমন মীর (২১)। তবে সোমবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রুদ্রশ্রী গ্রামের কাজল মীরের ছেলে সুমন মীর (১৮) শনিবার সকালে তার ঘরে সাড়ে ১১ হাজার টাকা একটি বাক্সে রাখেন। টাকা বাক্সে রাখার সময় প্রতিবেশী ওই শিশুসহ তার পরিবারের লোকজন ঘরে উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে হাওর থেকে ফিরে এসে বাক্সের টাকা না পেয়ে ওই শিশুকে সন্দেহ করেন সুমন। পরে সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে পেয়ে সুমন শিশুটিকে তার ঘরে নিয়ে আটকে রাখেন। রাতভর আটকে রেখে নির্যাতন শেষে রোববার সকালে মাথা ন্যাড়া করে বাড়ির সামনের বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান উদ্দিন খুঁটি থেকে শিকলে বাধা শিশুকে মুক্ত করেন।
নির্যাতনের শিকার শিশুটি বর্তমানে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। ভুক্তভোগী শিশু বলে, আমি কোনো টাকা চুরি করিনি। আমাকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে সুমন তার ঘরে আটকে রেখে কয়েকজন লোক নিয়ে মারধর করে। সকালে আমার মাথার চুল কেটে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। সুলতান মেম্বার আসার পর আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে, মামলার পর থেকে অভিযুক্ত সুমন মীর এবং তার বাবা-ভাই পলাতক রয়েছেন। এর আগে রোববার সকালে সুমন মীর বলেছিলেন, ওই শিশুর সামনে সাড়ে ১১ হাজার টাকা গুনে বাক্সে রাখি। আমার টাকা সে চুরি করেছে। এ জন্য তাকে শাস্তি দিয়েছি।
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, অভিযুক্ত সুমন মীরসহ মামলার আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।