শেরপুর শহরের চকপাঠক মহল্লার এমডি জামান।গ্রামের বাড়ী রৌহার নাওভাঙ্গায়। ষোল বছর ধরে থাকেন আমেরিকার নিউইয়র্কে।এই প্রবাসির কনসালটিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশি অসংখ্য মানুষ সিটি,ফেডারেল অথবা স্টেটপর্যায়ে সরকারি চাকরি পেয়ে আনন্দিত।দেশের মানুষের জন্য প্রবাসে এই সহযোগীতা করতে পেরে পরিতুষ্ঠ জামান।
এখন পর্যন্ত চার শতাধিক বাঙালি জামানের কনসালটিং এর সুবিধা নিয়ে স্বপেশায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।অনেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন।এই প্রবাসি উদ্যমী মানুষটি নিভৃতে অনেকের জীবন গড়ে দিচ্ছেন দূরপ্রবাসে।স্বপ্নের আমেরিকায় স্বপ্নপূরণ করতে অসংখ্য বাঙালিকে তিনি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।এসব তথ্য সুবিধা ভোগী বেশ কজন প্রবাসি দিয়েছেন।
২০০৫ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান এমডি জামান।ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে চাকরি করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে। নিউইয়র্কে গিয়ে প্রথম দু’বছর কাজ করেছেন ম্যানহাটনের রেস্টুরেন্টে পিৎজা ডেলিভারির কাজে।দুবছর পর সিদ্ধান্ত নেন এ কাজ আর নয়। কাজের পাশাপাশি নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেন জামান।
স্কুলের সাবস্টিটিউট টিচার হিসেবে যোগদান করে জীবনের উন্নত কাজের সূচনা করেন।স্কুলে দু’বছর কাজ করে নিজেকে আরেকটু ঝালিয়ে নিয়ে ২০১৪ সালে ঢুকে পড়েন স্বপ্নের সরকারি চাকরিতে।চাকরিতে পদোন্নতি পেয়ে এখন তিনি খুব ভাল আছেন।তিনি দেখতে পান নিজ দেশের অনেক যুবক যোগ্য হয়েও যথাযথ চাকরিটা পাচ্ছে না,অনেক কষ্ঠ হচ্ছে ব্যয় বহুল ওই দেশে।সিদ্ধান্ত নেন কমিউনিটির জন্য কিছু করবেন।
যেই কথা সেই কাজ। ২০১৫ সালে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে (বর্তমান নবান্ন) একটি ”আমেরিকায় চাকরি”শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেন।সেমিনারে অসংখ্য প্রবাসিরদের আমেরিকায় চাকরির নিয়ে সমস্যা ও সমাধানে খোলামেলা আলোচনা হয়।
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সাকসেস মাল্টিমিডিয়া এন্ড ক্যারিয়ার কনসালটিং ফার্ম।তাঁর কাছে চাকরি সংক্রান্ত কেউ গেলে প্রথমে একটি পরীক্ষা নেন।প্রার্থীর সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ঠ ধারণা নিয়ে চেষ্ঠা চালান চাকরির।সপ্তাহে দু’দিন শনি ও রোববার বিকেল থেকে চার-পাঁচ ঘণ্টা গ্রুপ করে বাঙালি চাকরি প্রার্থীদের জন্য ক্লাসের ব্যবস্থা করেন।
এর ফলে চাকরিপ্রার্থীরা আলোচনার মাধ্যমে পড়াশোনা করতে পারছেন আবার একজন দক্ষ প্রতিযোগী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলারও সুযোগ পাচ্ছেন।প্রার্থীরা একটি ভাল চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত সব সময় ওই সেন্টারে পড়াশোনার সুযোগ দিয়েছেন জামান।এজন্য তিনি নাম মাত্র ফি নেন।বেকারদের বিশেষ সমস্যায় সকল সময় তার সহযোগীতার কথা অনেকেই বলেছেন।গেল করোনা মহামারির সময়েও ভার্চুয়ালি অব্যাহত রেখেছেন এই সেবা।
২০২১ সাল পর্যন্ত চার বছরে প্রায় ৪শ বাঙালির জন্য ভাল কিছু করতে পেরেছেন জামান।জামানের স্ত্রী ওই দেশের সরকারি স্কুলের শিক্ষক মাহফুজা আক্তারও স্বামীর এই মহৎ সদা সহযোগীতা করেন।
এই শহরে অন্যকে নিয়ে ভাবনা অনেক দূরহ কাজ।সেখানে এমডি জামান নিজ কর্ম শেষ করে সপ্তাহে দুদিন নিজ দেশের চাকরি প্রার্থীদের জন্য ব্যয় করছেন।
এমডি জামান বলেছেন পরিকল্পনা মত এগিয়ে গেলেই এখানে চাকরির বিস্তৃত বাজারে ভাল একটি চাকরি পাওয়া সম্ভব।সাধ্যমত চেষ্ঠা করে দেশের একজন মানুষের মুখে হাসি ফোঁটানো অনেক আনন্দের।