শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নির্বাচনী খিচুরি নিয়ে ছোট শিশুদের ঝগড়ার জের ধরে সহোদর ছোট বোনের স্বামী (ভগ্নিপতি) রুমান মিয়াকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার সমন্ধি সোলায়মান (২৮) এর বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত রুমান মিয়া একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার বাঘবের এলাকায় শুক্রবার রাতে ইউপি নির্বাচনী প্রচারণার খিচুরি বিতরণ করা হয়। ফ্রিজে রেখে দেওয়া ওই খিচুরি পরদিন শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিহত রুমানের ছোট ভাই ভাষাণীর ছয় বছর বয়সী কন্যা বর্ষাকে খেতে দেওয়া হয়। বর্ষা ওই খিচুরি হাতে নিয়ে প্রতিবেশি মানিক মিয়ার বাড়িতে যায়। এসময় মানিক মিয়ার তিন বছর বয়সী ছেলে মমিন নাড়া দিয়ে তার খিচুরি ফেলে দেয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মানিকের ভাতিজা অটোচালক অভিযুক্ত সোলায়মান নিহত রুমানের পিতা ও সোলায়মানের সহোদর বোনের শ্বশুর আজিজুলকে আঘাত করে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে রুমান ও তার ভাই ভাষাণীর সাথেও ঝগড়া বাঁধে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মস্তুফার ছেলে এসে রবিবার বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে চলে যান।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রুমান তার মোটরবাইক নিয়ে বাঘবেড় বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু আগে থেকেই তার সমন্ধি সোলায়মান ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচশ গজ দূরে বাঘবেড় বালুরচর মসজিদের কাছে অবস্থান করছিল। সেখানে আসা মাত্রই রাস্তায় বেরিকেট দিয়ে ভগ্নিপতি রুমানের পথ রোধ করে ও উপর্যুপরি ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে ফেলে যায়। এসময় পথচারীরা টেরে পেয়ে রুমানকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রুমানের দেড় মাস বয়সী একজন ছেলে সন্তান রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, এ ঘটনায় নিহত রুমানের বাবা আজিজুল হক বাদী হয়ে চারজনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওসি বাদল আরো জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।