:মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল:
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ছোট-বড় সব রাস্তাগুলোই এখন কৃষক-কৃষাণীর দখলে। অধিকাংশ রাস্তাগুলোর উপর ধান মাড়াই, ধানের খড় শুকানোসহ খড়ের গাদা তৈরি করা হচ্ছে। এতে মহাসড়ক এবং সংযোগ সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। আর ধানে একাকার হয়ে আছে রাস্তার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা। ফলে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনায় পড়ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। তাই উপজেলা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলার নাকুগাঁও-নালিতাবাড়ী, বারমারি-টেংরাখালি, চারআলী-মধুটিলা ইকোপার্ক, আমবাগান-রানীগাঁওসহ বিভিন্ন সংযোগ সড়কে চলাচলকারী চালকেরা গাড়ী চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকেন। স্থানীয় এসকল সড়কের ট্রাক, বাস, সিএনজি, প্রাইভেটকার, অটোরিক্সা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল চালকেরা জানান, সড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় অনেক উচু করে ধান ও ধানের খড়, পাট ও পাটখড়িসহ বিভিন্ন ফসল কেটে এনে রাস্তায় বিছিয়ে রাখা হচ্ছে।
চালকরা আরো বলেন, সড়কের পাশের লোকজন গুলো রাস্তার উপর এমন ভাবে ফসলাদি বিছিয়ে রাখে সামান্য ব্রেক করলেই চাকা পিছলে যায়। ওভারটেক করতে গেলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বাড়ে। তিন চাকার যান রাস্তায় উল্টে যায়। মালবোঝাই গাড়ীর নিয়ন্ত্রন রাখা কঠিন হয়ে যায় বলে জানান তারা।
এই সড়ক গুলোতে নিয়মিত যাতায়াতকারীরা বলেন, সারা বছর ধরেই এভাবে দেখছি। গাছসহ ফসল রাস্তায় বিছিয়ে রাখায় গাড়ির চাকা যেমন এলোমেলো চলছে তেমনি প্রচন্ড ধুলা ও খড়কুটায় সাধারন মানুষের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে। আর বৃষ্টি হলেই সড়কে পড়ে থাকা অবশিষ্ট অংশ পচে ভয়াবহ পিচ্ছিল আকার ধারন করে।
অনেক চালক ও পথচারিরা বলছেন, এসমস্ত কাজ নিষেধ করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে মার খাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ সড়ক গুলোকে মাড়াইয়ের কাজে বাড়ীর উঠানের মতো ব্যাবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা আরো বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সড়কগুলো নিরাপদ রাখার মতো কোথাও কোন কর্তৃপক্ষ নেই। এতে করে প্রতিনিয়তই ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে কোন না কোন দূর্ঘটনা। এসব দূর্ঘটনায় আহতদের বেশির ভাগই হাত-পা ভেঙ্গে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
বিশেষ করে এসব এলাকার স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসকল সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করছে।
এ ব্যাপারে সড়কের আশ-পাশের কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সড়কে ফসল মাড়াই ও শুকানোয় কারোর কোন সমস্যা হচ্ছে না। আর পাকা রাস্তায় ফসল মাড়াই করা ও শুকানো খুব সুবিধা। এতে গাড়ির চাকায় দ্রুত মাড়াই হয়ে যায়। শুকানোও যায় খুব দ্রুত।
ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
(লেখক: সমাজকর্মী)