শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় শতাধিক মাছপ্রেমি যুব-প্রৌঢ়। সবার হাতে বাঁশের লাঠি আর বাঁশের তৈরি পলো। দু-চারজনের হাতে উড়ন্ত বা খেয়া জাল। পানিতে অর্ধনিমজ্জিত অবস্থায় পলো ফেলে ধীরপায়ে নদীজুড়ে এগিয়ে চলছে সবাই। কখনও কখনও কারও পলোতে আকটা পড়ছে দু-একটি মাছ। অধিকাংশের পলোই ফাঁকা। তারপরও আশায় বুক বেঁধে গতি সামনের কয়েক কিলোমিটার নদীপথ। এভাবে ভোগাই নদীর ভারত সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও স্থলবন্দর এলাকায় রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুর থেকে শুরু হয়ে চলে বিকেল পর্যন্ত। এর নাম মাছ শিকারের উৎসব বা স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘বাহৈত’ উৎসব। মাছ ফাঁদে পড়ুক আর না পড়ুক, শখে এমন উৎসবের আয়োজন করে তারা।
উপজেলার ভেদীকুড়া গ্রামের ছায়েদুল হক (৪৮) জানান, তিনি মূলত পেশায় একজন কৃষক। কিন্তু মাছ শিকার তার নেশা। এ নেশা থেকেই স্থানীয়দের সাথে এসেছেন পলো দিয়ে মাছ শিকার করতে। দেড় ঘণ্টায় প্রায় দুই কিলোমিটার নদীপথে তার পলোতে মাছ একটিও আটকায়নি। তাতে কোন আফসোস নেই তার।
এভাবেই শুধুমাত্র শখের বশে মাছ শিকারে এসেছেন ভেদীকুড়া, চিনামারা, জয়নদ্দিনপাড়া, তিনানী, রাজনগরসহ কয়েক গ্রামের শতাধিক মানুষ। বেশিরভাগ শিকারীই মাছ না পেয়ে ফেরত গেছেন খালি হাতে। তবু একসাথে শিকারে নেমেই যেন তৃপ্ত সবে।
রবিবার স্থানীয়রা ভোগাই নদীতে চলে মাছ শিকারের এ উৎসবে ‘বাহৈত’ মিলিত হয়। প্রতিবছরের নভেম্বর মাস এলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এভাবে কয়েক দফায় মাছ শিকারের উৎসব চলে ভোগাই নদীতে।