শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পরিকল্পিকভাবে পিতাকে হত্যার বিচারের দাবীতে কন্যাশিশুকে নিয়ে শিশুর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কন্যা শিশুর গর্ভধারীনি মা মমতাজ বেগম। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রেসক্লাব নালিতাবাড়ীর মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কন্যাশিশু তাহসিন আক্তার তানিশার পক্ষে তার মা মমতাজ বেগম লিখিত বক্তব্যে জানান, পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার মহল্লার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম তারার সাথে ২০১১ সালে তার বিয়ে হয়। এরপর তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্মের পর রূপালী ইয়াসমিন নামে এক নারীর পরকীয়ায় জড়িয়ে ২০২০ সালে তাকে তালাক দেন শফিকুল ইসলাম তারা। এর আগে মুর্শিদা নামে আরেক এক নারীর সঙ্গেও কিছুদিন পরকীয়া চলে তার স্বামীর।
এদিকে, নিহত শফিকুলের ভগ্নিপতি তোফাজ্জল হোসেনের কাছে ধার দেওয়া ৫ লাখ টাকা এবং ব্যবসায়িক পার্টনার হাসু মিয়ার কাছে পাওনা সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে মতানৈক্য বাঁধে শফিকুল ইসলামের। এরই মধ্যে শফিকুল ময়মনসিংহের এক নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়ালে ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয় এবং পিবিআই এর তদন্ত শেষে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। ফলে পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে শফিকুল অবৈধভাবে রূপালীকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো তার ব্যবসায়ী পার্টনার হাসু মিয়ার বাড়িতে পালিয়ে থাকে। এমতাবস্থায় চলতি বছরের গত ৯ জুলাই শফিকুল ইসলাম তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে রূপালী তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করায়। এরপর ১২ জুলাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অগোচরে কোনপ্রকার ছাড়পত্র না নিয়ে মুর্শিদার সহযোগিতায় ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করায় রূপালী। পরবর্তীতে গত ১৯ জুলাই শফিকুল ইসলাম তারা সেখানে মারা যান। এ বিষয়ে তার শিশুকন্যা তানিশা বাদী হয়ে রুপালীকে প্রধান ও মুর্শিদা বেগমকে আসামী করে শেরপুর আদালতে মামলা করেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, আর্থিক লেনদেন এবং পারস্পরিক পরকীয়ার জেরেই মামলায় উল্লেখিত আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে শফিকুল ইসলাম তারাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
সংবাদ সম্মেলনে রূপালী নামে ওই নারীকে চরিত্রহীন দেহ ব্যবসায়ী উল্লেখ করে বলা হয়, বাল্যকাল থেকে মাত্র ২৫ বছর বয়সের মধ্যে রূপালী অন্তত পাঁচজনকে বিয়ে করেছে এবং দেনমোহর ও খোরপোষের টাকা নিয়ে তালাক দিয়েছে। অনেকের সাথে বিয়ে ছাড়া অবৈধ শারিরিক সম্পর্ক স্থাপন করেও তাকে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করেছে। এরমধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এসময় কন্যা তানিশার মা মমতাজ বেগম তার সাবেক স্বামী ও একমাত্র কন্যার পিতা শফিকুল ইসলাম তারার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তপূর্বক আইনী ব্যবস্থা এবং হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশনা মতে লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।