শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টির পানিতে উপজেলার মরিচপুরান এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি স্থানে ভোগাই নদীর সাড়ে ৬শ ফুট বাঁধ ভেঙে ৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতায় সড়ক ডুবে থাকায় এবং বাড়ি ঘরে পানি থাকায় দুইদিন ধরে ৭ গ্রামের মানুষ দারুণ কষ্টের শিকার হচ্ছেন।
১৫ জুলাই সোমবার রাতে এলাকাবাসির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে অতি বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভোগাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। সোমবার মধ্যরাতে উত্তর কোন্নগনর রাজারখাল পাড় এলাকায় ভোগাই নদীর ২শ ফুট বাঁধ ও ফকিরপাড়া চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে ভোগাই নদীর সাড়ে ৪শ ফুট বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙণ অংশ দিয়ে ভোগাই নদীর ঢলের পানি প্রবেশ করে মরিচপুরান, বাঁশকান্দা, ফকিরপাড়া, খলাভাঙ্গা, ভোগাইরপাড়, মরিচপুরান পুর্বপাড়া ও উল্লারপাড় গ্রামের আশপাশে এলাকা গুলোতে সৃষ্ট বন্যা দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানি সড়কে থাকায় ফকিরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, খলাভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মরিচপুরান থেকে ফকির পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়কে, মরিচপুরান চৌরাস্তা বাজার থেকে ছনটাল হয়ে রাবারড্যামের সড়কে ও মরিচপুরান পুর্বপাড়া থেকে খলাভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়ক উপর দিয়ে দুইদিন ধরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্রায় অর্ধ শতাধিক মাছ চাষিদের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। যাতায়াতের সড়কে পানি থাকায় এলাকাবাসি চলাচল করতে পারছেন না। বন্যার পানি নিস্কাশনের জন্য ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবী জানান।
মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার শফিক আহমেদ জানান, দুই অংশে সাড়ে ৬শ ফুট ভোগাই নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙণ অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় সড়কসহ ৭টি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু বলেন, দুটি ভাঙণ অংশ দেখেছি। এবং বাঁধটি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নবকুমার চৌধুরী জানান, নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুইটি এলাকার বাধ প্রবল স্রোতে ভেঙে যায়। পানি কমে যাওয়ার পর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার ফলে পাহাড়ি ঢলে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলায় পানি নেমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা শারমিন বলেন, পাহাড়ি ঢল বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে ৭টি গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০ মেট্রিক টন চাউল বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।