শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও ইউপি মেম্বার সেলিমের বিরুদ্ধে তিন সন্তানের জনককে জুতার মালা পড়িয়ে গ্রামে ঘুরানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবকের নাম ইন্তাজ আলী (৩৫)। সে দক্ষিণ রাণীগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।
ইন্তাজ আলী বেশ কয়েজন গ্রামবাসীকে নিয়ে মঙ্গলবার (২২ মে) সকালে প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, গত ২০ মে রোববার সকালে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও মেম্বার মো: সেলিম বাড়িতে চৌকিদার পাঠিয়ে আমাকে আলীর বাজারে ডেকে নিয়ে আসে। এখানে এনে আমাকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ‘আমি আমার মাকে মেরেছি’ এমন অভিযোগ এনে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাকে মারধর করে। আমি রোজা রাখা সত্বেও আমাকে থুথু খাওয়ায় এবং নাকে খত দেওয়ায়। পরে আমার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সারা গ্রাম ঘুরায়। এসময় আমার স্কুল পড়ুয়া তিন কন্যা আমাকে অপমান থেকে রক্ষা করার জন্য কান্নাকাটি করেও কোন ফল পায়নি। লজ্জায়, অপমানে এখন আর আমি কারও কাছে মুখ দেখাতে পারছি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ওরা প্রভাবশালী। গ্রামে ওদের দাপটে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। বর্তমান সময়েও এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার হওয়া উচিৎ।
অভিযুক্ত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুলের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অপর অভিযুক্ত মেম্বার সেলিম জানান, ইন্তাজের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রামের সবাইকে নিয়ে বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
ইন্তাজের মা রাহেলা বেগম বলেন, আমি ছেলের বিরুদ্ধে এমন শাস্তির জন্য অভিযোগ করিনি। আসলে বড় নাতির সঙ্গে আমার একটু ঝগড়া হয়েছিল। আমি রাগের মাথায় এটারই বিচার চেয়েছিলাম।
তবে ঘটনার নেপথ্য কারণ সম্পর্কে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ইন্তাজের ছোট ভাইয়ের জমি কম দামে কিনতে বাঁধা দেওয়া এবং নাবালক মেয়েকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাঘবেড় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে এটা কোনভাবেই ঠিক হয়নি।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি তদন্ত সারোয়ার হোসেন জানান, এখনও পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।