শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পূর্ব শত্র“তার জের ধরে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে চাঞ্চল্যকর ইদ্রিস হত্যা মামলার প্রধান আসামী যোগানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে হবি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ মে) দিবাগত রাত দুইটার দিকে পলাতক থাকাবস্থায় গোয়াইনঘাট থেকে যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ। শুক্রবার (৩ মে) রাত ৮টার মধ্যেই তাকে নিয়ে পৌছা সম্ভব হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঘটনার দিন এজাহার নামীয় চেয়ারম্যানের দুই স্ত্রী ও ভাই-বোনসহ ৮জনকে গ্রেফতার করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ। দুইদিন পর গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় চেয়ারম্যানের ছেলে রিয়াদকে। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত মোট ২৭ আসামীর মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
অন্যদিকে চেয়ারম্যানের ছেলে সারোয়ার জাহান শান্তকে মুন্সিগঞ্জের টুঙ্গিবাড়ি পাইকপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালালে টের পেয়ে সটকে পড়ে হত্যা মামলা দ্বিতীয় এ আসামী। তবে চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
পুলিশ জানায়, গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে যোগানিয়া কুত্তামারা গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাতিঝি জামাই মাজব আলীর বাড়ির নিকটে নিজের জমিতে কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে পাকা ধান কাটতে যায় একই এলাকার সোহরাব আলী। এসময় আধিপত্ত বিস্তার ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ নানা কারণে পূর্ব শত্র“তার জের ধরে চেয়ারম্যানের পূর্ব নির্দেশ অনুযায়ী মাজব আলী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ লোকজন নিয়ে হামলা করে ও মারধর করে। ফলে ধান কাটা ফেলে রেখে সোহরাব আলী বাড়ি চলে আসে। বেলা এগারোটার দিকে পুনরায় লোকজন নিয়ে েেত গিয়ে ধান কেটে বাড়ি আসে। খবর পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবি, তার ছেলে সারোয়ার জাহান শান্ত ও দুই স্ত্রীসহ দলবল নিয়ে সোহরাব আলীদের বাড়িতে হামলা করে। একপর্যায়ে আত্মরার্থে সোহরাব আলী এবং তার আত্মীয়-স্বজন প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসে ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এসময় চেয়ারম্যান হবি ও তার ছেলে শান্ত তাদের সাথে লুুকিয়ে রাখা অবৈধ পিস্তল বের করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে সোহরাব আলীর চাচাতো ভাই ইদ্রিস আলী (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
পরে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। তবে এসময় জনতার হাতে ধরা পরে চেয়ারম্যান পরে হামলাকারী রাহুল মিয়া (২২), ওসমান (৪০) ও হারেজ আলী (৪৫)। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে গুলির খোসা উদ্ধার করে এবং গ্রেফতার করে মাজব আলী ওরফে মাজু মিয়া (৩৫), ছুর মামুদ (২৫), আমেলা খাতুন ঝর্ণা (৩০), শাহানাজ (৪৫) ও সূর্যি বেগম ওরফে ময়না (৫৫) নামে আরও ৫ জনকে। এছাড়াও ২৭ এপ্রিল শনিবার সকালে গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে চেয়ারম্যানের ছেলে রিয়াদ হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবির গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চেয়ারম্যানকে নালিতাবাড়ী আনা হচ্ছে।