পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরে মাকে ডিম ভাজতে বলে। এই সময়ের মধ্যে মেয়েটি কাপড় নিয়ে পুকুরে গোসল করতে যায়। ১৫/২০ মিনিট পর মেয়ের দেরি দেখে মা মনোয়ারা বেগম মেয়ের খোঁজ নিতে পুকুরে যান। মেয়েকে পানিতে পড়ে থাকতে দেখে মা চিৎকার করতে থাকেন। পরিবারের লোকজন দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটিকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ পলাশীকুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিক্ষার্থীর নাম খাতুনে জান্নাত তৃপ্তি (১৫)। মেয়েটি বাবা মার অতি আদরের হওয়ায় মঙ্গলবার বাড়ির আঙ্গিনায় তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। সে উপজেলার পলাশিকুড়া গ্রামের স্কুল শিক আব্দুল কুদ্দুছের মেয়ে। তৃপ্তি পলাশিকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়তো এবং এ বছরের এসএসসি পরীার্থী ছিল। বিগত ২০১৪ সাল থেকে মেয়েটি নার্ভের সমস্যায় (দ্রুত চলা ফেরা করতে না পারা) ভোগছিল তৃপ্তি।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, তৃপ্তি ২০১৪ সালে হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরে চিকিৎসকরা তার নার্ভে সমস্যার কথা জানান। মেয়েকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া জন্য পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে আগামী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছিলো। ইতিমধ্যে পাঁচটি পরীক্ষায় সে অংশ গ্রহণ করেছে। কিন্ত গত সোমবার পুকুরে গোছল করতে গিয়ে মেয়েটির মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টার সময় তৃপ্তিকে মার অনুরোধে বাড়ির আঙ্গিনায় মেয়ের কবর দেওয়া হয়েছে। অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মা মনোয়ারা বলেন, জান্নাত জুড়ে হাটতে পারতো না। বসলে পিছন দিকে পড়ে যেতো। লেখাপড়া প্রতি ভিষণ আগ্রহ ছিল তার। টেস্টেও পাঁচটা পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মেয়ে সব সময় বলতো আমি এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করমু। তখন আমাকে নিয়া তোমাদের চিন্তা করতে হবে না। বলে মা কাঁদতে থাকেন।
বাবা আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, রাজধানীর ল্যাব এইডের চিকিৎসকরা নার্ভেও সমস্যার কথা বলেছেন। মেয়েকে নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছি। কিন্ত আমার মেয়ে সবাইকে না বইলা চলে গেলো বলে কাঁদতে থাকেন।
পলাশিকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেছার উদ্দিন বলেন, তৃপ্তি কিছুটা অসুস্থ্য থাকায় বিদ্যালয়ের সবাই তাকে ভালবাসতো। মেয়েটা ছাত্রী হিসেবেও ভাল ছিল। মেয়েটার মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের শিক শিক্ষার্থী সবাইকে কাঁদিয়েছে।
শেরপুর টাইমস/ বা.স