শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে খাদ্য অধিদপ্তরের সীলকৃত ট্রাকভর্তি আটক ৭শ বস্তা চাল ১০ টাকা কেজি দরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর নয়। তবে পুরনো হওয়ায় খাদ্যগুদাম থেকে বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তাগণ।
সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার (২২ মে) শহরের বিজয় রাইচ মিল থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সীলকৃত ৭শ বস্তা (৩০ কেজি করে) ট্রাকভর্তি চাল চুক্তি অনুযায়ী আড়াইআনী সরকারী খাদ্যগুদামে সরবরাহ করতে যায় এবং বস্তাগুলো গুদাম কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেন। খবর পেয়ে পৌর মেয়র আবুবক্কর সিদ্দিক গুদামে গিয়ে চালের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ বস্তাভর্তি চালসমূহ নিম্নমানের বলে ফেরত পাঠান। ফেরত যাওয়ার সময় উপজেলা পরিষদের সামনে পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু সরকারী সীল দেখে চালভর্তি ট্রাক দাড় করিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এসময় অভিযোগ ওঠে, ট্রাকভর্তি চাল ১০ টাকা কেজি দরের এবং এগুলো কালোবাজারে সংগ্রহ করা। ফলে এ নিয়ে রাতেই পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ট্রাকভর্তি চাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পক্ষে খাদ্য পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের চালের বস্তাগুলো নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন। এসময় চালের বস্তাগুলো ১০ টাকা কেজি দরের নয় বলে জানানো হলে উপস্থিত কিছু যুবক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এলাকায় নিচে টেনে-হিচড়ে মারধর শুরু করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তদন্ত শেষে চালগুলো ১০ কেজি দরের প্রমাণিত না হওয়ায় মালিকের জিম্মায় ফেরত পাঠানো হয়। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব চাল পুরনো, নিম্নমানের ও গুদামে সরবরাহের অনুপযোগী।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের জানান, চালগুলো খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর নয়, তবে পুরনো। এ মুহূর্তে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চালই মজুদ নেই। এ কর্মসূচী গত ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলেই শেষ হয়ে গেছে। তাই মালিকের জিম্মায় চালগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। এসময় তিনি তাকে মরধরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান একই মতামত পোষণ করে জানান, যেহেতু চালগুলো পুরনো হওয়ায় গুদাম কর্তৃপক্ষ গ্রহণ না করে ফেরত পাঠিয়েছেন, এক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। যার চাল তাকেই ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মামলার বিষয়ে জানতে চেয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরকারী নাম্বারে যোগাযোগ করে মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।