শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সমশ্চুড়া এলাকার রঞ্জনা ঝর্ণায় স্থাপিত বিএডিসির সেচ পাম্প বন্ধ থাকার কারনে কৃষকদের বোরোধান ক্ষেত মরে যাচ্ছে। তীব্র তাপদাহ ও খড়ায় পর্যাপ্ত সেচ সরবরাহ না পেয়ে হুমকীতে পড়েছে এলাকার প্রায় ৫০ একর জমির বোরো আবাদ। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই এলাকার শতাধিক প্রান্তীক ও বর্গা চাষী। তাই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
অভিযোগে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ঘেঁষা সমশ্চুড়া গ্রামের রঞ্জনা ঝর্না পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির বিএডিসি প্রদত্ত সেচ মেশিনটি প্রায় ১৫ দিন আগে বিকল হয়ে যায়। মেশিনটি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত না করে ফেলে রাখে সমিতি কর্তৃপক্ষ। এতে সেচ না পেয়ে উঠতি বোরো ধান ক্ষেত ফেটে চৌচির হতে থাকে। থোড় ধানে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ না করায় পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের কৃষকদের প্রায় ৫০ একর ধানক্ষেত এখন নষ্টের পথে। বোরো আবাদের শেষ মুহুর্তে এসে পর্যাপ্ত সেচ না পেয়ে কোন কোন ধান ক্ষেতের শীষ বের হচ্ছে না। আবার কোন কোন ক্ষেতে মরা শীষ বের হচ্ছে। অবিলম্বে সেচ না দিলে অপুরনীয় ক্ষতি হবে পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের শতাধিক প্রান্তিক কৃষক ও বর্গা চাষীর।
ওই এলাকার ভুক্তভোগী মুনসর আলী, আব্দুল হাকিম, সুরুজ্জামান, মোহাম্মদ আলী, জাকারিয়া ও তারা মিয়াসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, আমরা একরে ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে সেচ বিল পরিশোধ করেছি। প্রায় একমাস ধরে সমশ্চুড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি ক্ষেতে পানি না দেয়ায় আমাদের ধানক্ষেত মরার উপক্রম। আমরা অনেক কষ্ট করে টাকা খরচ করে বোরো আবাদ করেছি। এখন আবাদের শেষ ভাগে এসে পানি পাচ্ছি না। এসময়ে জমিতে পর্যাপ্ত সেচ না দিতে পারলে ধানে প্রচুর চিটা হবে। এমনকি ধানের ফলনও কমে যাবে। তাই আমরা দ্রæত এর সমাধান চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন ও সমশ্চুড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোস্তফা মিয়া জানান, অতিরিক্ত পানির বিল পরিশোধ করেও রঞ্জনা ঝর্না পানি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে পানির অভাবে ফসল নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত ধানক্ষেতে পানি না দিলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সমশ্চুড়া রঞ্জনা ঝর্না পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি সাগর আলী বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বিএডিসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন সেচ মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়েছে। এই মেশিনের পার্স সচরাচর পাওয়া যায় না। ফলে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছেনা। বিএডিসি অফিসে কথা বলেছি মেশিন ঠিক হলেই পানি সরবরাহ করা হবে।
উপজেলা বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। এছাড়া আমাকে কেউ কিছু জানায় নি। জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী (ভারপ্রাপ্ত) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জেনেছি। ওই এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।