শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের নিভৃত পল্লীর স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থী কিশোরী মোর্শেদা (১১) ধর্ষনে গর্ভবর্তী হওয়ার পর গত ২৬ নভেম্বর রোববার শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে এক কন্যা সন্তান প্রসব করে এখন বিপাকে পড়েছে। এমন ঘটনায় প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে নবজাতক শিশুর দায়িত্ব নেবে কে?
মোর্শেদার পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি একই গ্রামের প্রতিবেশী যুবক মিঠু মিয়া মোর্শেদাকে অপরহণ করে নিয়ে বিভিন্নস্থানে রেখে ধর্ষণ করে। এর ফলে কিশোরী মোর্শেদা গর্ভবর্তী হয়ে পড়ে। পরে মোর্শেদার দরিদ্র বাবা মোখলেছুর রহমান ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই ধর্ষক মিঠু মিয়াকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে নালিতাবাড়ীর থানার পুলিশ দায় সারা প্রতিবেদন দাখিল করলেও দীর্ঘদিনও ধর্ষিতা ভিকটিমকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরবর্তীতে লম্পট ধর্ষক মিঠু মিয়া ধর্ষিতা মোর্শেদাকে তাদের বাড়ীর কাছে ফেলে রেখে যায়।
এদিকে দরিদ্র বাবা মোখলেছুর রহমান ধর্ষিতা কন্যাকে নিয়ে বিপাকে পড়ে যায় এবং মামলা পরিচালনার সামর্থও হারিয়ে ফেলে। এক পর্যায়ে বিচারের প্রত্যাশায় ওই দরিদ্র মোখলেছুর রহমান শেরপুর শহরে ঘুরতে ঘুরতে মানবাধিকার কর্মী এড. আলমগীর কিবরিয়া কামরুল এর দ্বারস্থ হন। পরে এড. কামরুল বিস্তারিত অবগত হয়ে ধর্ষিত মোর্শেদাকে বিনামূল্যে আইনী সহায়তার হাত বাড়িয়েদেন। সেই সাথে ধর্ষণের শিকার গভবর্তী মোর্শেদাকে নিজ খরচায় স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পরে ২৬ নভেম্বর রোববার গভবর্তী মোর্শেদা শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে এবং হয়ে যায় কিশোরী মাতা।
পরদিন ২৭ নভেম্বর সোমবার কিশোরী মাতা মোর্শেদা সদ্য প্রসব করা নবজাতককে সাথে নিয়ে শেরপুরের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মসলেহ উদ্দিন মিয়া’র আদালতে ন্যায় বিচার পেতে দারস্থ হয়। পরে ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক সার্বিক শুনানী শেষে ওই ধর্ষক মিঠু মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোনার আদেশ দেন।
ধর্ষিতা ও কিশোরী মাতা মোর্শেদার পরিবার জানান, এড. আলমগীর কিবরিয়া কামরুলের আর্থিক সহায়তায় মোর্শেদার সন্তান প্রসব সহ চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও জেলা সমাজ সেবা কর্তৃপক্ষ ঔষধপত্র দিয়েও সহায়তা করেছেন। এন ব্যাপারে এড. আলমগীর কিবরিয়া কামরুল জানান, ঘটনা এবং মামলার পর থেকেই ধর্ষিতা মোর্শেদার পরিবারকে ধর্ষক মিঠুসহ তার পরিবার মামলা প্রত্যহার করার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে ভিকটিক মোর্শেদা নবজাতককে নিয়ে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আতংকে রয়েছে। এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ওই পরিবারটি।
শেরপুর টাইমস/ বা.স