শীত মানেই কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে থাকা নয়। শীতের মনোরম আবহ উপভোগ করতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে বেড়ান ভ্রমণপ্রিয় বাঙালীরা। এই মৌসুমে ভারতও যেতে পারেন। ভিসা না থাকলে এখনই প্রস্তুতি নিন। এখন ভারতীয় ভিসা পাওয়া অনেকটা সহজ।
ভিসা আবেদনের প্রস্তুতি
ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদনের জন্য যে কাগজপত্রগুলো জমা দিতে হবে-
১. জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
২. আপনার বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ, গ্যাস বা পানির বিলের ফটোকপি।
৩. আপনার পাসপোর্টের ২ ও ৩ নম্বর পৃষ্ঠার ফটোকপি।
৪. আপনার বর্তমান পেশার আইডি কার্ডের ফটোকপি। ছাত্র হয়ে থাকলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৫. আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের শেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট পেপার। তা থাকলে ডলার এন্ডোর্সমেন্ট পেপারের ফটোকপি সঙ্গে পাসপোর্টের শেষপাতার ডলার এন্ডোর্সমেন্ট সিলের ফটোকপি।
৬. ২”×২” (দুই ইঞ্চি বাই দুই ইঞ্চি) এক কপি ছবি। সফট কপি এবং হার্ড কপি উভয়ই লাগবে।
ভারতীয় ভিসার জন্য অনলাইনে এই ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও ছবি দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করুন। সঠিকভাবে পূরণ করার পর ফরমের পিডিএফ কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করুন। এবার ফরমের নির্ধারিত জায়গায় ২”×২” সাইজের ছবি আঠা দিয়ে যুক্ত করুন। ছবি অবশ্যই তিন মাসের মধ্যে তোলা হতে হবে।
ফরম ও ভিসা ফি পরিশোধের প্রিন্ট কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, পেশার সার্টিফিকেট বা এনওসি, বর্তমান ঠিকানার যে কোনো বিলের ফটোকপি, পাসপোর্টে ডলার এনডোর্সমেন্টের কপি ও পাসপোর্ট আপনার কাছের ভারতীয় ভিসার সেন্টারে গিয়ে জমা দিন। ফর্ম পূরণের পরবর্তী ৪ দিনের মধ্যে আপনাকে আপনার কাছের ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার-এ গিয়ে ফর্মসহ সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। ৪ দিন পর আপনার ডাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইট থেকে মুছে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ফর্ম জমা নেয়া হয়।
ফর্ম জমা দেয়ার আগে অবশ্যই ভিসা ফি ৮৪০ টাকা জমা দিতে হবে। ঢাকায় যারা থাকেন তারা যমুনায় ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারের সামনেই ইউক্যাশের বুথ আছে। সেখানে গিয়ে সহজেই টাকা জমা দিতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়া।
ভিসা সেন্টারে প্রবেশের নতুন নিয়ম
ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষে বাংলাদেশে ভিসা আবেদন গ্রহণ করে থাকে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার-আইভ্যাক। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র নিরাপত্তার জন্য নতুন নিয়ম করেছে। আইভ্যাক-এ যেসব বস্তু নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না সেই তালিকায় রয়েছে সব ধরনের ব্যাটারিচালিত বা বৈদ্যুতিক গ্যাজেট। যেমন– মোবাইল ফোন, ওয়াকি-টকি ক্যামেরা, অডিও/ভিডিও ক্যাসেট, কম্প্যাক্ট ডিস্ক, এমপিথ্রি, ল্যাপটপ, অথবা পোর্টেবল মিউজিক প্লেয়ার।
আগে থেকেই ব্যাগ নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এখন সেটি আরো বাড়িয়ে বলা হয়েছে, সকল ধরনের ব্যাগ, যেমন- ট্রাভেল ব্যাগ, ব্যাক প্যাক, ব্রিফকেস, স্যুটকেস, চামড়া/পাট/কাপড়ের ব্যাগ ও জিপ ফোল্ডার। শুধু একটি প্লাস্টিক ব্যাগে আবেদন সংক্রান্ত কাগজপত্র বহনের অনুমতি দেয়া হবে। জানানো হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীর সঙ্গে কোনো ব্যক্তিকেও আবেদন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। তবে শুধুমাত্র শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে দো-ভাষীরা প্রবেশ করতে পারবেন।
যেকোনো ধরনের দাহ্য উপাদান ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে আনা যাবে না। যেমন দিয়াশলাই বক্স, লাইটার, সিগারেট ও জ্বালানি ইত্যাদি। ছুরি, কাঁচি বা নেইল কাটারের মতো যেকোনো ধারালো উপাদান আর অস্ত্র বা বিস্ফোরক নিষিদ্ধ। ভিসা আবেদন কেন্দ্রে এসব নিষিদ্ধ বস্তু জমা রাখার সুবিধা নেই। ফলে কেন্দ্রে আসার আগেই সেগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে আইভ্যাকের পক্ষ থেকে।
ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার-আইভ্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তাকর্মীর বিবেচনার ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য যেকোনো সন্দেহজনক উপাদান নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এছাড়া ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া চলাকালীন নিরাপত্তাকর্মীরা আবেদনকারীর ব্যাগ তল্লাশি করতে পারবে।