সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ি ঢলের পানি উজানে কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে কমলেও ভাটিতে পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার মালিঝিকান্দা ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। পাহাড়ি ঢলের ফলে ঘর-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ কমে যাওয়ায় উপজেলা পরিষদ চত্বর ও সদর বাজার থেকে পানি নদীতে নেমে গেছে। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যাও কমেছে। তবে উজানে পানি কমার পর শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের হাঁসলিগাঁও, জুলগাঁও, রাঙ্গামাটিয়া ও দেবোত্তরপাড়া এবং হাতিবান্ধা ইউনিয়নের হাতিবান্ধা, ঘাগড়া, বেলতৈল, মারুয়াপাড়া, কামারপাড়া ও সরকারপাড়া গ্রামের নিম্নাঞ্চলের পানি বাড়ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে এবং উপজেলার গ্রামীণ ও পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঢলের পানির প্রবল তোড়ে ১৮০ ফুট এলজিইডির পাকা সড়ক, দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, মহারশি নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানের দেড় কিলোমিটার এবং সোমেশ্বরী নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানের এক কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্ধশত কাঁচা ও আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সদর বাজার ও উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। ইতিমধ্যে নামতে শুরু করেছে পাহাড়ি ঢলের পানি। তবে এতে ঝিনাইগাতী সদর, কাংশা ও ধানশাইল ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল। শতাধিক মৎস্য খামার ডুবে যায় ও গ্রামীণ কাঁচা, পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছে।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও বণিক সমিতির নেতা জাহিদুল হক মনির বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের ফলে মহারশি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ঝিনাইগাতী বাজার ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
পাহাড়ি ঢলের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান তিনি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, পাহাড়ি ঢলের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ভাটি এলাকায় পানি ঢুকছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া ১০ মেট্রিক টন খয়রাতি (জিআর) চাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।