বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এলিফ্যান্ট ওভারপাস চালু হয়েছে। যেটির নিচে দিয়ে ট্রেন, ওপরে পারাপার হবে হাতি। এরইমধ্যে সেই ওভারপাস দিয়ে হাতির দল চলাচল করছে। হাতি পারাপারে চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চুনতিতে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এ ওভারপাস চালু হয়েছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে নির্মিত এ এলিফ্যান্ট ওভারপাস দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। এতে পাহাড়ের নিচে সুড়ঙ্গ দিয়ে চলবে ট্রেন আর ওপরে পারাপার হবে হাতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের চুনতি, ফাঁসিয়াখালি ও মেধাকচ্ছপিয়ায় তিনটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রয়েছে। এই অভয়ারণ্যগুলো হাতি চলাচলের পথ হিসাবে পরিচিত। এর মধ্যে চুনতিতে চালু হয়েছে প্রথম এলিফ্যান্ট ওভারপাস। ইতোমধ্যে সাড়ে ৯ মিটার উচ্চতা, ৬ দশমিক ৮৫ মিটার প্রস্থ ও ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ ওভারপাসে হাতি চলাচল শুরু করেছে।
হাতি চলাচলের এ পথকে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ওভারপাসের ওপর কলা ও কাঠবাদামসহ প্রায় ২২ প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তৈরি করা হয়েছে লোনা পানির লেক ও দুটি আন্ডারপাস। একইসঙ্গে বন্যপ্রাণীর সুরক্ষার কথা বিবেচনায় রেখে নির্দিষ্ট দূরত্বে তৈরি করা হয়েছে সুরক্ষা দেয়াল। মূলত পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে বনের ভেতর এ এলিফ্যান্ট ওভারপাস করা হয়।
দক্ষিণ এশিয়া এটাই প্রথম স্থাপনা উল্লেখ করে তমা কনস্ট্রাকশনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সাকিল আহমেদ বলেন, ‘এটা আমাদের দেশের জন্য গৌরবের। হাতির স্বাভাবিক চলাচলে যাতে কোনো প্রকার সমস্যা তৈরি না হয় সে লক্ষ্যে এ ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে।’
আশ্চর্য ও বিস্ময়কর ওভারপাস দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, হাতির জন্য ওভারপাস এমনটা আগে কখনো দেখা হয়নি। ফলে এটা দেখার জন্য আলাদা আগ্রহ আছে। আবার সে ওভারপাস দিয়ে এরইমধ্যে হাতি চলাচল শুরু করেছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন আইইউসিএন সমীক্ষা করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭টি স্থায়ী ও ৮টি অস্থায়ী হাতি চলাচলে পথ বা করিডোর চিহ্নিত করে।