জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ কাউনিয়ারচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
কাউনিয়ারচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তারুল ইসলাম এবং সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। অথচ গোপনীয়তা বজায় রেখে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০ জুলাই ৫ সদস্যের উপস্থিতিতে পার্শ্ববর্তী উপজেলার বকশীগঞ্জের উলফাতুন নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একজন শিক্ষক জানান. একই স্থানে সকালে ও বিকালে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকালের পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক পদে কাউনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তারুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্যে পরীক্ষায় অংশ নেন। তাকে প্রধান শিক্ষক নির্বাচিতও করা হয়। অথচ বিকালে মুক্তারুল ইসলাম সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে আবারও পরীক্ষায় অংশ নেন।
এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি শিক্ষানুরাগী ও স্থানীয় নেতাদেরকে অবগত করা হয় নাই। তারা কিছুই জানে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই ১১শ করে শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
এ বিষয়ে কাউনিয়ার চরের আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেছুর রহমান মাস্টার যুগান্তরকে বলেন, গোপনে আঁতাত করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে নিয়োগ হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা থাকতে গোপনে বকশীগঞ্জ নিয়োগ পরীক্ষা কেন?
প্রাক্তন ছাত্র অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান মনি যুগান্তরকে বলেন. গোপনে অস্বচ্ছ নিয়োগ ও দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, নিয়োগের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে কাউনিয়ারচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন. কাউনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আমি প্রথম হয়েছি। তাই আমাকে প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে।
তাহলে কেন আবারও সানন্দবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের জন্য বিকালে একই নিয়োগ কমিটির কাছে পরীক্ষা দিলেন—এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, পরীক্ষা দিয়ে দেখলাম, এ বিষয়ে কিছু লেইখেন না।
চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক যুগান্তরকে বলেন, স্কুলের পাশেই আমার ইউনিয়ন পরিষদ, আমরা কেউ কিছুই জানি না, নিয়োগটি অনিয়ম করে গোপনে হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষক প্রতিনিধি লাভলু মিয়া, মুজা আলম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শাহা আলম বলেন, নিয়োগের ব্যাপারে আমরা কোনো কিছুই অবগত নই।
আওয়ামী লীগ নেতা ইয়ানুছ মোল্লা বলেন, অনিয়মের বিষয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।
সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন জানান, নিয়ম মেনেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষকরা সকালে ও বিকালে অংশ নেন।
সকালে উত্তীর্ণ হয়ে বিকালে উত্তীর্ণ না হওয়ার বিষয়ে বলেন, এটা কোনো সমস্যা না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফার নিকট জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, কাউনিয়ারচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং সানন্দবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি এমপিকে জানিয়েছি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি কেন আমাকে জানানো হলো না।
#যুগান্তর