ত্যাগ (পর্ব-১)
– হাসিব আল হাসান
হঠাৎ বাংলাদেশ সেনাবাহিনির অন্যতম দূরদর্শী ইউনিট ১৪ ইস্ট বেঙ্গলের কন্ট্রোলরুমের ওয়াকিটকিতে ডিউটি অফিসার ক্যাপ্টেন মোরশেদ শুনতে পেলেন আলফা-১ আরপি পোস্ট থেকে ল্যান্স কর্পোরাল হেলাল বলছে যে দিগারাও পাহারে অতর্কিত ভাবে শান্তি বাহিনিরা আক্রমণ চালিয়েছে।পাহাড়টিতে অদিবাসিদের বসবাস ছিল। ডিউটি অফিসার তখনই ক্যাম্প অফিসার মেজর হামিদ কে বিষয়টি জানান।মেজর হামিদ সেই মুহূর্তেই ক্যাম্প এর সকল অফিসার এবং সৈনিকদের ৩০০ সেকেন্ড এর মধ্যে সমরের জন্য তৈরি হওয়ার আদেশ দেন।অন্যদিকে ক্যাপ্টেন মোরশেদ ল্যান্স কর্পোরাল হেলাল এর সাথে কথা চালিয়েই যাচ্ছেন।
হেলাল সাহেব বললেন, শান্তিবাহিনীর জনবল প্রায় একশর কছাকাছি আর আমাদের কাছে ভারি কোন অস্ত্রও নেই স্যার এবং আমাদের জনবল মাত্র চারজন। ক্যাপ্টেন মোরশেদ তাদের উপর পাল্টা গুলিবর্ষণ চালিয়ে যেতে বললেন। কমান্ড অনুযায়ি আলফা-৩ এবং চার্লি-১ থেকে ৭ জন সেনা সদস্য তাদের সাথে যুক্ত হলো তাদের মধ্যে একজন অফিসারও ছিলেন। তারা চেষ্টা করছে শান্তিবাহিনীদের ট্যাকল পাহারের পাশের নদীটির অইপারেই রাখতে। ক্যাম্প থেকে পাহাড়ে যেতে সময় লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট। এইদিকে ৩০০ সেকেন্ড হতে নাহ হতেই সকলেই অস্ত্র হাতে প্রস্তুত। কিন্তু মোট জনবল শান্তিবাহিনির অর্ধেক এরও কম এবং ভারি অস্ত্র বলতে তিনটা কামান মাত্র; কিন্তু সাহস ও দেশের প্রতি ভালোবাসা অসীম। এর মধ্যেই চলতে শুরু করল ১৪ ইস্ট বেংগলের রণযান। উদ্দেশ্য দিগারাও পাহাড় কে মুক্ত রাখা।
এইদিকে মেজর হামিদ আরপি ইনচার্জকে বলছে যেন গুলিবর্ষণ বন্ধ নাহ হয়। তিনি বলছেন স্যার ওদের জনবল অনেক বেশি। ট্যাকল দেওয়া খুব কস্টের হয়ে দাড়াচ্ছে, ইতোমধ্যে দুইজন আহত হয়ে পরেছেন। রশদও শেষ প্রায়। তিনি আরো জানালেন, পাহাড়ের এক বিচ্ছিন্ন এলাকা থেকে কিছু অদিবাসীদের নাকি তারা ধরে নিয়ে গেছে এবং তাদের জিম্মি করে রেখেছে।
কথাটি বেশ আতংকের। এইদিকে ৯ জন সেনা সেই ৫৫ মিনিট জাবত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কারতুজও শেষ এর দিকে প্রায়। এর মধ্যেই সকল সমরযান এসে পাহারে অবস্থান নেয়।
রিজার্ভ টিম বাদে সবাই সমরে অংশ নেয়। রিজার্ভ টিম অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই পাহাড় এর সকলকে নিরাপদ স্থানে রেখে তারাও বন্ধুকযুদ্ধে অংশ নেয়।
এখন সেনা জনবল হয়ে দাঁড়ায় ৫০ জন প্রায়। ওয়াইসি মেজর হামিদ ও তখন অস্ত্র হাতে। হঠাৎ ল্যাফটেনেন্ট আলিফ ও সার্জেন্ট পাভেল এর শরীরে বুলেট লাগে, সার্জেন্ট পাভেল গুরুতর ভাবে আহত হয়। মেডিকেল টিম তাকে চিকিৎসা করতে থাকে সাথে ফায়ারও করতে থাকে। অনেকক্ষন পর হঠাৎ শান্তিবাহিনীরা ফায়ার বন্ধ করে দেয়। একটু পরেই একটা কামান এসে পরে মেজর হামিদদের অবস্থানরত এলাকায়।
(চলবে…)
হাসিব আল হাসান,
শিক্ষার্থী।
(শেরপুর টাইমস ডট কমের “সাহিত্য পাতা” সকলের জন্য উন্মুক্ত। আপনার স্বরচিত ছড়া- কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য ইমেল করুন sherpurtimesdesk@gmail.com এই ঠিকানায়।)