দেশের জনপ্রিয় পর্যটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম সেন্টমার্টিন। পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে সবসময়ই থাকে ‘বঙ্গোপসাগরের টিপ’ বলে খ্যাত দ্বীপটি। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে এ দ্বীপে। এতে সেন্টমার্টিনের অনেকাংশ তলিয়ে গেছে। এরপর থেকে নতুন করে ভাবনায় পড়েছে দ্বীপের প্রায় নয় হাজার বাসিন্দা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়ুতে প্রবল বেগে দমকাসহ ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে ও প্রবল বর্ষণে সেন্টমার্টিন একটু একটু করে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। এতে দ্বীপের বসবাসরত মানুষদের মনে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। দ্বীপের বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছরই ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হই আমরা। কিন্তু কখনো মনোবল ভাঙেনি আমাদের। এবার এ অবস্থা দেখে সবাই ভয়ে আছে।’
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সেন্টমার্টিনে মুষলধারে বৃষ্টি ও তুমুল বাতাস বয়ে চলছে। এরপর থেকেই লন্ডভন্ড হতে শুরু করেছে বাড়িঘর এবং গাছপালা। এখন পর্যন্ত নয়টি বসতঘরসহ প্রায় ২১টি স্থাপনা গুটিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিমাংশে অবস্থিত একমাত্র কবরস্থানটির ১৫০ ফুটেরও বেশি তলিয়ে গেছে সাগরে। যতই যাচ্ছে থেমে থেমে বাড়ছে বাতাসের গতিবিধি। সাগর উত্তাল, বাড়ছে জোয়ারের পানি, তলিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। এসব কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন গোটা দ্বীপবাসী।
এই অবস্থায় টেকনাফেও যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে না দ্বীপের বাসিন্দাদের। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে জুলাই মাসে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান বেশ কয়েকদিন বন্ধ ছিল। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দ্বীপের লোকজন নিত্য প্রয়োজনীয় মালামালও ঠিকমতো সংগ্রহ করতে পারছে না।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, দ্বীপে এ রকম ভয়াবহ ভাঙন কোনো সময় দেখা যায়নি। জোয়ারের পানি আর সাগরের ঢেউয়ের কারণে দ্বীপের চারপাশেই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বেশি ভাঙন ধরেছে উত্তর-পশ্চিমাংশে। বিস্তীর্ণ কেয়াবন বিলীন হয়ে গেছে। লোনা হয়ে যাচ্ছে দ্বীপের প্রায় টিউবওয়েলের মিষ্টি পানি।
দ্বীপ সংস্কার প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, সেন্টমার্টিনে যে জায়গাগুলোতে ভাঙন ধরেছে, সেসব জায়গায় ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করানো হচ্ছে। দ্বীপ রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।