নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্রের সোলার প্যানেল নিজের ট্রলারে লাগানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান মামুনের বিরুদ্ধে অন্য মালামালও আত্মসাতের অভিযোগ আছে। এ নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া।
কমিটিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহনুর রহমানকে প্রধান করা হয়। এছাড়া উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার জোসনা বেগম ও সহকারী প্রোগ্রামার মাহমুদুল হাসানকে সদস্য রাখা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের পদমশ্রী সকাল বাজারে ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্রে প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌর প্যানেল স্থাপন করে সরকার। এর সঙ্গে ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় মালপত্রসহ রোজিনা চৌধুরী ও আবিদ নূর আলম নামের দুই উদ্যোক্তা নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন সেখানে সেবা কার্যক্রম চালু থাকে। সম্প্রতি ওই ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্রর ১২ লাখ টাকা মূল্যের সৌর প্যানেলগুলো নিয়ে যান চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান মামুন। এর সঙ্গে তথ্য সেবা কেন্দ্রের অন্য মালপত্রও নিয়ে যান তিনি।
সরকারি মালপত্র আত্মসাৎ করায় এলাকায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। পরে তদন্ত কমিটি করে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নানা অপকর্ম করছেন চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান মামুন। নিজ ক্ষমতা বলে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সরকারি গাছপালাও কেটে নিয়েছেন। ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্রের সরকারি সৌর প্যানেল নিয়ে নিজের নৌকায় লাগিয়েছেন।
ওই ইউনিয়নের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা রোজিনা চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এ জন্য আমি সেবা কেন্দ্রে কম যাই। সৌর প্যানেলগুলো তিনি তার অনুসারীদের দিয়েছেন। নিজের নৌকায় লাগিয়েছেন। আমি প্রতিবাদ করেছি কিন্তু কাজ হয়নি। বর্তমানে আমার কাছে শুধু একটা ল্যাপটপ ছাড়া কিছুই নাই। সব মালামাল চেয়ারম্যান নিয়ে গেছেন।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান মামুন বলেন, তথ্য সেবা কেন্দ্রের সৌর প্যানেলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই একটি সৌর প্যানেল মসজিদে ও কিছু লোকজনকে দিয়েছি। প্রয়োজনে এসব ফেরত দিয়ে দেবো। আমার নৌকায় একটি প্যানেল স্থাপন করেছি।
এ বিষয়ে জানতে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনুর রহমানকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেনি। তবে কমিটির সদস্য একাডেমিক সুপারভাইজার জোসনা বেগম বলেন, আমরা মঙ্গলবার তথ্য সেবাকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানে সৌর প্যানেল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করতে একটু সময় লাগবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, তথ্য সেবা কেন্দ্রের মালপত্র নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#জাগো নিউজ