পদ্মার পাড়ে গড়ে ওঠা দেশের নান্দনিক রেষ্টুরেন্ট প্রজেক্ট হিলসা। দেশের মাটিতে নেটিজেন ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বর্তমান ভাইরাল ইস্যু এখন এটি। এই প্রজেক্টের ষ্ট্রাকচার ও কনস্ট্রাকশনে দায়িত্বে থাকা ম্যানস্ ল্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীর প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-আমিন শেরপুরের ছেলে হওয়ায় শেরপুরবাসীর কাছে আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে। তার বেড়ে ওঠা ও এই প্রজেক্ট নিয়ে সম্প্রতি শেরপুর টাইমসের সাথে কথা বলেছেন তিনি। বিস্তারিত তুলে ধরছেন ইমরান হাসান রাব্বী।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে ছোট জেলা শেরপুরের তরুণ প্রতিভারা আলো ছড়াচ্ছে দেশজুড়ে। দেশের গন্ডি পেরিয়েও শেরপুরের সন্তানদের পদচারণা সমৃদ্ধ করছে সীমান্তবর্তী শেরপুরকে। কিছুদিন আগেও দেশজুড়ে নানা দপ্তরের উচ্চপদে কর্মরত শেরপুরের মানুষদের নামই জানতো না শেরপুরের সাধারণ জনগণ। শুধু সরকারি দপ্তর নয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানেও বেশ সুনামের সাথে কাজ করছে শেরপুরের মানুষ। দিন পাল্টাচ্ছে। নেটের দুনিয়ায় এখন সবার খোঁজই এখন হাতের মুঠোয়। ফেসবুকে স্ক্রল করলেই চোখে পড়ে শেরপুরের মানুষদের ইতিবাচক বিভিন্ন কাজের তথ্য ও ছবি।
সম্প্রতি দেশের সুনামধন্য রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘এভার গ্রুপ’ শিমুলিয়া ঘাটের ৫’শ মিটার আগে তৈরী করেছে বিশ্বমানের রেস্টুরেন্ট “প্রজেক্ট হিলসা”। এই রেস্টুরেন্ট তৈরী করা হয়েছে ইলিশের আকৃতিতে তাই বাইরে থেকে দেখতে ইলিশের মতো। গত ২৭ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে এই রেস্টুরেন্টটি। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে সপ্তাহের প্রত্যেক দিন। অনেকেই দাবি করছেন প্রজেক্ট হিলসা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট। বিশ্বমানের এই রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে শেরপুরের সন্তান প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-আমিন বলেন, “টিম ওয়ার্কের মাধ্যমেই এই প্রজেক্ট সফল। এই প্রজেক্টে দায়িত্ব পাওয়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিই সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সবাই দেশের কথা ভেবেই কাজ করেছেন, কারণ আমরা জানতাম দেশের বৃহৎ কিছু একটা আমরা করতে যাচ্ছি। সেই স্পৃহা থেকেই আমরা এই প্রজেক্টটি সম্পন্ন করেছি।”
প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-আমিন এর জন্ম শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার চৈতাজানি এলাকায়। সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ও গৃহিণী শহিদা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের দ্বিতীয় আল-আমিন। বড় ভাই ৩৪তম ফিসারিজ ক্যাডার ও ছোট ভাইও প্রকৌশলী।
শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমী থেকে ২০০২ সালে এসএসসি ও শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০০৪ সালের কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি সম্পন্ন করেন আল-আমিন। পরবর্তীতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে ২০১০ সালে প্রকৌশল হিসেবে পড়াশুনা শেষ করেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনীতির সাথে জড়িত আল-আমিন বর্তমানে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
ব্যক্তিজীবনে দুই কন্যা সন্তান ও সহধর্মিনী আজিজুন নাহারকে নিয়ে ঢাকাতেই অবস্থান করছেন আল-আমিন। কর্মজীবনে এর আগে ক্রাউন সিমেন্ট ও এলজিইডির ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন তিনি।