সারাবিশ্ব যখন প্রাণঘাতী করোনার থাবায় স্তব্ধ, জনমনে যখন উদ্বেগ উৎকন্ঠা আর শঙ্কা। ঠিক তখনো শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স অভিযোগ করেন তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণের ব্যবস্থাও নেই। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা নিজেরাও আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে রোগীর তেমন ভিড় নেই। তবে হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশির রোগীরা আসছেন বলে জানান কর্মরত চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) উপজেলা সদরের বাসিন্দা মানববাধিকারকর্মী আক্তার উজ্জামান জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে ছিলেন চিকিৎসকের পরামর্শ আনতে। কিন্তু সেখানে অবাধে মানুষ প্রবেশ করছে হাত না ধুয়ে। হাসপাতালে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা না থাকায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. মাজেদুর রহমান ও চিকিৎসক সহকারী (স্যাকমো) আবুল হাশেম বলেন, আমরা সবার থেকে বেশি হুমকির মধ্যে আছি। ব্যক্তিগতভাবে একটি কাপড়ের নরমাল মাস্ক ব্যবহার করছি। এখনো গাউন ও ক্যাপ পাইনি। এভাবেই আমাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। আবার বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গেও থাকতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাশাপাশি আমাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যেও একটা ভয় কাজ করছে।
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আহেদ ইকবাল বলেন, সরকার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলছেন। কিন্তু আমরা যে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী দেখছি, এটাও তো এক প্রকার জনসমাগম। তাই জনসাধারণের পাশাপাশি করোনাভাইরাস আতঙ্কে আছেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। তবে হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে সেবাগ্রহিতাদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের হাতে এখনো সে রকম কিছু আসেনি। তবে আজ-কালের মধ্যে সিভিল সার্জনের কার্যালয় হতে ১০টি মাস্ক, ১০টি ক্যাপ, ১০টি গাউন পাঠাতে পারে, যা পর্যাপ্ত নয়।
এ ব্যাপারে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. আবুল কাশেম আনওয়ারুল রউফ বলেন, শেরপুর জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেজনক কোন রোগী পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় উপকরণ পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।