‘গত ক বছর ধুইরে বন্যার পানিতে বোরো ধান তলাইয়ে যা, খুরাকের ধানও ঘরে তুলতে পারি না। তাছাড়া সময়মতো পানি দাও, সার দাও আরও কত ঝামেলা, তাই বোরো না করে সবজি চাষ করছি। এতে ঝামেলা কম, লাভও বেশি।’ কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নামা পাড়া গ্রামের কৃষক মো. শাজাহান (৩০)।
ভারত সীমানান্ত ঘেষা এ উপজেলায় গত কয়েক বছরে অনেক কৃষকের অর্থনৈতিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে সবজি। সবজি চাষ করেই অনেক চাষীর ভাগ্য খুলেছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ উপজেলা থেকে প্রতিদিন সবজি যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। এখানকার চাষীরা সবজি চাষ করে এখন বেশ লাভবান হচ্ছেন। তাই এখন সবজি চাষে ঝুঁকছে কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কালিনগর, পাগলারমুখ, নামাপাড়া, কোনাগাঁও, বনগাঁও, চতল, হলদীবাটা, দুধনই, ভারুয়া, হলদীগ্রাম, মানিককুড়া, গোমড়া, ধানশাইল, হাতিবান্দা, মালিঝিকান্দা, রাংটিয়া, সন্ধ্যাকুড়া, বাকাকুড়া, গান্ধিগাঁওসহ প্রায় গ্রামগুলোতেই শাক-সবজির চাষ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত কয়েক বছর আগে যেসব জমিতে ধান চাষ হতো। ওই সব জমিতে এখন সোভা পাচ্ছে চিচিঙ্গা, চাল কুমড়া, শসা, করলা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজির খেত। সবজির খেত গুলোতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকের পাশাপাশি কৃষাণীরাও। কেউ খেতে পানি দিচ্ছেন আবার কেউ কীটনাশক দিচ্ছেন।
কোনাগাঁও গ্রামের কৃষক মো. উকিল মিয়া বলেন, ‘আগে অনেক কষ্টে সংসার চলত আমার। কিন্তু সবজি চাষ করে আমার সংসারে সচ্ছলতা পেয়েছে। গত বছরের চেয়ে আমি এ বছর বেশি জমিতে সবজির চাষ করেছি। আশা করছি কয়েক দিন পর থেকেই ফসল তুলব।’
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার চলতি মৌসুসে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছিল ১হাজার হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, বছর বছর এ উপজেলায় সবজির চাষাবাদ বাড়ছে। আমরা কৃষকদের যথাসাধ্য পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের কাছে গিয়েছেন। ফলে এবার সবজির উৎপাদন ভাল হয়েছে।