শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে মাঝাপাড়া আব্দুল হামিদের বাড়ীর সম্মুখে খালের ওপর ২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত বক্স কালভার্ট ১৩ মাসে ভেঙে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের কারণেই বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে। অনিয়মের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে পুনরায় বক্স কালভাটটি নির্মাণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি৩) এর আওতায় ধানশাইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে মাঝাপাড়া আব্দুল হামিদের বাড়ীর সম্মুখে খালের ওপর ২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।
ধানশাইলের শাহজাহান কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করে। কাজ শেষে ২০১৯ সালের ৩০ মে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করা হয়। বক্স কালভার্টের ওপর দিয়ে জনগণ চলাচল শুরু করার ১৩ মাস পরে চলতি বছরের জুন মাসের বন্যায় বক্স কালভার্টটি ধসে পড়ে। এটি নির্মাণের পর থেকে এলাকাবাসীরা নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ তোলেন।
স্থানীয় মোশারফ ও আজিলা বেগমসহ অনেকই বলেন, বক্স কালভার্টটি নির্মাণে পরিমাণের চেয়ে কম রড ও সিমেন্ট এবং নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় বছর না যেতেই এটি ভেঙে গেছে। ফলে যাতায়াতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে দ্রুত সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান সরকার মুঠোফোনে বলেন, ‘আসলে একাজগুলো আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বাদের সঙ্গে মিউচুয়াল করেই থাকি। ভাইজান আমি একটু দলিলের কাজে ব্যস্ত আছি। আপনার সঙ্গে এব্যাপারে পরে যোগাযোগ করি বলে কেটে দেই।’
বক্স কালভার্টটি নির্মাণে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিন্টু মিয়া (বর্তমানে টাঙ্গাইলে কর্মরত) মুঠোফোনে বলেন, ‘এলজিএসপি’র কাজে আমাদের দেখভালের দায়িত্ব থাকে না। আমরা শুধু প্রাক্কলন তৈরী করে দেই। আমি যে প্রাক্কলন তৈরী করে দিয়েছিলাম, ওইভাবে নির্মাণ করা হলে এতো দ্রুত সময়ে ভেঙে যাওয়ার কথা না। আমার মনে হয় প্রাক্কলন অণুযায়ী চেয়ারম্যান-মেম্বার কাজ করেনি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মধু মিয়া বলেন, ‘বক্স কালভার্টটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যার পানির চাপে ভেঙে গেছে এটি।’
ধানশাইল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে, এটি জানতাম না। আপনার মাধ্যমেই জানলাম। নিম্নমানের কাজ করা করা হয়নি, প্রাক্কলন অণুযায়ী কাজ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আমার এলাকাটি বন্যা কবলিত এলাকা হওয়ায় পানির তোড়ে এটি ভেঙে গেছে হয়ত।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’