দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা কর্মকর্তা ছাড়াই চলছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর ফলে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছে না ওই ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য গড়ে তুলেছেন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। এ উপজেলায় ছয়টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও স্থাপনা রয়েছে শুধু মালিঝিকান্দা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটির। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও), উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা (সাকমো), ফার্মাসিস্ট, অফিস সহায়ক ও আয়ার একটি করে পদ রয়েছে। কিন্তু উপজেলার মালিঝিকান্দা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও) পদটি গত ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকে শূণ্য রয়েছে।
উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রতে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার মূল দায়িত্ব চিকিৎসা কর্মকর্তাদের। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা কর্মকর্তা না থাকায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলেও তাদের সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেষণে এনে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাই চিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে থাকেন উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা।
সরেজমিনে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চিকিৎসা কর্মকর্তা ও আয়ার পদ এখনও শূণ্য। দায়িত্ব পালন করছেন উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মনিরুউজ্জামান ও অফিস সহায়ক মো. আবুল কাশেম। ফার্মাসিস্ট পদে একজন থাকলেও তিনি ছুটি রয়েছেন।
উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা (সাকমো) মো. মনিরুজ্জামান জানান, প্রতিদিন এখানে চিকিৎসা নিতে শতাধিক রোগী আসে। এত রোগীর চাপ থাকে একা সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।
উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের জহিরন বেগম (৬৫) শেরপুর টাইমসকে বলেন, ‘বড় অসুখ হয়ছে বাবা। বড় স্যার (এমও) নাই, তাই আইলে শুধু এইল্লে ওষুধ (প্যারাসিটামল) দেয়। টেহা (টাকা) নাই বড় হাসপাতালে যাওয়ার। তাই ছোট স্যারদের (সাকমো) দেখায়ে চলে যাইতেছি।’
মালিাঝকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম তোতা শেরপুর টাইমসকে বলেন, ‘এই জায়গায় একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা থাকার কথা। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে পদটি শূণ্য রয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রদানের জন্য দাবি জানান।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা কর্মকর্তা না থাকায় সেখানে চিকিৎসা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যে সেখানে সপ্তাহের দু-একদিন চিকিৎসা কর্মকর্তা পাঠাব, সে উপায়ও নেই। কারণ আমার নিজেরই ডাক্তার সংকট, হাসপাতাল চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’