শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। গত জুলাই মাসের বন্যায় গোচারণ ভূমি দীর্ঘদিন জলমগ্ন ও সংরক্ষিত খড় নষ্ট হওয়ায় এ সংকট তৈরী হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই মাসের টানা সাত দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার গোচরণ ভূমি ও বোরো ধান কাটা শেষে বিস্তীর্ণ মাঠ দীর্ঘদিন জলমগ্ন থাকে। এখনও অনেক এলাকার গোচারণ ভূমি জলমগ্ন হয়ে আছে। ফলে গোচারণ ভূমিতে উৎপাদিত লতাপাতা, ঘাস ও সংরক্ষিত খড় নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি ওইসব এলাকার গবাদিপশুকে মাঠে চড়াতে না পেরে সংরক্ষিত খড় খাওয়ায়ে পালন করে কৃষকেরা। এতে সংরক্ষিত খড়ের মজুদ অল্প দিনেই শেষ হয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা।
উপজেলার সারিকালিনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, তার পাঁচটি গরু রয়েছে। গরুর খাবারের জন্যে পাঁচ একর পরিমাণ জমির শুকনো খড় সংরক্ষণ করেছিলেন তিনি। কিন্তু বন্যার পানিতে খড়ের পাল্লার সিংহভাগ পঁচে-গলে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন গোচরণ মাঠ পানিতে নিমজ্জিত থাকায় গরু মাঠে চড়াতে না পারায় সংরক্ষিত খড় খাওয়ায়ে গরু পালন করতে হয়েছে তাকে। বর্তমানে সংরক্ষিত খড় শেষ হয়ে গেছে এবং এখনও মাঠে ঘাস উৎপাদন না হওয়া গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
ঝিনাইগাতী সদরের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিম্নাঞ্চলে দীর্ঘদিন পানি থাকায় ওইসব এলাকার গোচারণ ভূমির লতাপাতা, ঘাস ও খড় নষ্ট হওয়ায় খড়ের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই পাঁচ শত টাকার খড় দুই হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, এ উপজেলায় কিছুটা গোখাদ্য সংকট আছে, তবে খড়ের দাম অনেকটা কম। আমরা গোখাদ্য সংকট মোকাবেলায় কৃষক ও খামারীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, অনেক এলাকার গোচারণ মাঠে ঘাস জন্মে গেছে। খুব অল্প দিনের মধ্যেই সব এলাকার মাঠে ঘাস জন্মাবে। গবাদি পশুকে খড়ের পাশাপাশি বাঁশের পাতা খাওয়ানোরও পরামর্শ দিয়েছেন ।