শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে এবার বোরো মৌসুমে ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু সরকার এই উপজেলা থেকে মাত্র ৪৩৩ মেট্রিক টন ধান কিনবে। উৎপাদনে সঙ্গে ধান ক্রয়ের এই বিশাল ব্যবধান থাকায় কৃষকেরা হতাশ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় গত সোমবার থেকে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্যবিভাগ।
কৃষি কার্যালয়ের দেয়া তালিকা অণুযায়ী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তৃণমূল পর্যায়ে যাচাই-বাচাই শেষে কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য বিভাগের কাছে পাঠানো শুরু করেছে। তালিকা মতে প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ ৫২০ কেজি ধান বিক্রির সুযোগ পাবে।
উৎপাদনের অনুপাতে সরকারিভাবে ধান কেনার পরিমাণ অনেক কম হওয়ায় কৃষকেরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। উপজেলার প্রায় শতাধিক কৃষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বালিয়াগাঁও গ্রামের কৃষক সাদ্দাম মন্ডল বলেন, উৎপাদন খরচের চেয়ে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। আবার সব কৃষক সরকারের কাছে ধান বিক্রির সুযোগ পাবেন না। এ কারণে কৃষকেরা এবার বড় ধরণের লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন।
ঝিনাইগাতী গ্রামের কৃষক ছফর উদ্দিন বলেন, এক একর জমি বোরো ধান চাষ করেছিলেন। এ পরিমাণ জমি থেকে ধান পেয়েছেন প্রায় ৭০ মণ। স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন ৪৮০ কেজি ধান বিক্রির বরাদ্দ (প্রত্যয়ন) পেয়েছেন তিনি। এবার বোরো ধান আবাদে তার লোকসান হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দেবনাথের দেয়া তথ্য মতে, বুধবার এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত সরকারীভাবে খাদ্যগুদামে ১২ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে এবং ধান কেনা অব্যাহত আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, খাদ্য বিভাগ এবার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনছে। এ উপজেলায় বোরো মৌসুমে ৬৮ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু উৎপাদিত হয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হলেও কৃষকেরা খুশি হতে পারছেন না। কারণ, হাটবাজারে ধানের দাম অনেক কম। তাই আশা নিয়ে সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে কৃষকেরা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খলিলুর রহমান বলেন, এ উপজেলায় সরকারিভাবে চাল ও ধান কেনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয়-মেম্বার চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কৃষকের তালিকা আমাদের এখানে আসতে শুরু করছে। আশা করছি, ধানের দাম কিছুটা হলেও বাড়বে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, প্রকৃত কৃষক যেন ধান বিক্রি করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্যে কাজ করছেন তিনি।