ছোট্র নদীটির নাম কালঘোষা। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে নেমে এসেছে এটি। সীমান্ত পার হয়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সোমেশ^রী নদীর বুকে গিয়ে মিশেছে। এ নদী থেকে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের তিনটি স্থানে এখনও বালু উত্তোলন চলছেই। স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে এ নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় নদী ও রাস্তাঘাট ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশের ভারসাম্য এবং নদীর আশে-পাশের বাড়িঘর। বার বার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানের পরও থামছে না বালু উত্তোলন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালঘোষা নদীর কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও কালি মন্দিরের পাশে জব্বারের ছেলে ছামিউল নামে এক মুদি দোকানদার, বাকাকুড়া গ্রামের নবী মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে কছর আলীর ছেলে আসমত, বাকাকুড়া মাদ্রাসার পূর্বপাশে নুর ইসলামের ছেলে শাহিন প্রত্যেকে একটি করে শ্যালো মেশিনে (খননযন্ত্র) পাইপ লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। আর নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড় ধসে পড়ছে। এ ছাড়া বালু পরিবহনের ফলে রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে যাচ্ছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ইঞ্জিনের শব্দে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখারও বিঘœ ঘটছে।
বালু উত্তোলনকারী শ্রমিক মোবারক, উকিলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০টাকা মুজুরিতে বালু উত্তোলনের কাজ করেন। বর্তমানে এ নদী থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ট্রলি বালু উত্তোলন করা হয়। আর এসব বালু জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতি ট্রলি ১ হাজার ৪০০টাকা (শুধু বালুর দাম) মূল্যে বিক্রি করা হয়।
বালু উত্তোলনের অনুমতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাকাকুড়া গ্রামের নবী মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে কছর আলীর ছেলে আসমত শাহিন বলেন, ইউএনও স্যারেরা কিছু দিন আগে আইসে শ্যালো মেশিন, পাইপ ভেঙ্গে দিয়েছে। এমন সংবাদ শুনার পর থেকে আমিও মেশিন নিয়ে বাড়িতে রেখে দিয়েছিলাম। দুইদিন ধরে চালু করছি। বালু উত্তোলনে কারও কাছে অনুমোদিত নেয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাকাকুড়া মাদ্রাসার পূর্বপাশে নুর ইসলামের শাহিন বলেন, ভাই এতদিন মেশিন বন্ধ ছিল, দুই-তিন ধরে চালু করছি। এছাড়া আমরাতো নদী থেকে বালু উত্তোলন করি না, আমরা নদীর পাশের পুকুর খনন করে বালু উত্তোলন করছি।
কাংশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে প্রকৃতির ও গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ ক্ষতি রোধ করতে হবে। অবিলম্বে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে দাবি জানিয়েছেন।
ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন,
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। এই স্থান গুলোতে বালু উত্তোলনের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।