শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক শাহ আলম (৪১) হত্যাকান্ডের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া মো. সবুজ মিয়া (৩৯) ঝিনাইগাতী থানার গিলাগাছা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে এবং একই উপজেলার মালিঝিকান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মো. রূপন মিয়া (২৯) ।
গতকাল রোববার (৮ অক্টোবর) সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলার কুচনিপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশের ধানক্ষেতে পড়ে থাকা শাহ আলমের মরদেহ গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার উদ্দেশ্যে অটোচালককে সঙ্গে নিয়ে ঘাতকরা কিনেন ওই ফাঁস দেওয়ার রশি।
সোমবার (৯ অক্টোবর) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিয় সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, মৃত শাহ আলম প্রতিদিন অটোরিকশা চালানো শেষে রাত ১২ টার মধ্যে বাড়ি চলে আসত। গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় ভাড়ার উদ্দেশ্যে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় বাড়ির লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। পরে লোকমুখে জানতে পারে ঝিনাইগাতী উপজেলার কোচনীপাড়া গ্রামের রাস্তার পাশে সাবেক চেয়ারম্যান শামছুল হকের ধানক্ষেতে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক নিহত শাহ আলমের ভাই ফিরুজ মিয়া সেখানে গিয়ে শাহ আলমের মরদেহ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ অটোরিকশাটি ঝিনাইগাতীর বালিয়াচন্ডি পশ্চিমপাড়া গ্রামের নবীয়াল হোসেনের বাড়ির আঙিনা থেকে উদ্ধার করে। পরে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত সবুজ মিয়া ও রূপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর শাহ আলমের অটোরিকশাটি ৫০০ টাকায় ভাড়া করে ঝিনাইগাতী উপজেলার বাঁকাকুড়া বাজারে গিয়ে একটি দোকান হতে রশি ক্রয় করে ঘটনাস্থল কোচনীপাড়া এলাকায় আসে। পরে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাকি ৪৫০ টাকা পরে দিবে বলে শাহ আলম চলে যেতে বলে। এর কিছুক্ষণ পর আসামি সবুজ মিয়া মোবাইল ফোনে বাকি টাকা দেওয়ার কথা বলে শাহ আলমকে কোচনীপাড়া বাজারে আসতে বলে। শাহ আলম ঘটনাস্থল কোচনীপাড়া এলাকায় আসলে আসামি সবুজ মিয়া অটোগাড়ির পেছনে বসে এবং আসামি রূপন মিয়া অটোরিকশার সামনের সিটে বসে কোচনীপাড়া বাজারের দিকে যেতে থাকে। দুজনে মিলে শাহ আলমের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি চালিয়ে এসে ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বালিয়াচনিাড গ্রামে ফেলে রেখে চলে যায়।
গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য সোমবার বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম।
প্রেস ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফখরুজ্জামান জুয়েল, (ক্রাইম এন্ড অপস) খোরশেদ আলম, (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান, ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়াসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।