কলেজছাত্রকে অপহরণ ও জোর পূর্বক বিয়ে করা সেই তরুণী ইশরাত জাহান পাখিই এবার কথিত স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গত ১২ অক্টোবর স্বামী নাজমুলসহ তিনজনকে আসামি করে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক মামলা করেছেন তিনি।
এর আগে, ৩ অক্টোবর নাজমুল নিজেই অপহরণ ও জোরপূর্বক বিয়ের অভিযোগে ইশরাত জাহান পাখির বিরুদ্ধে একই আদালতে মামলা করেছিলেন।
ইশরাত জাহান পাখির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাখির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরেই তাদের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর নাজমুল নানা অজুহাতে পাখির পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করেন। এ ঘটনায় পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের আগামী ৬ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
পাখির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে এ আইনজীবী বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইশরাত জাহান পাখির সঙ্গে নাজমুলের বিয়ে হয়। একইদিন নাজমুল পটুয়াখালী থেকে তাকে অপহরণ করে বিয়ে করা হয়েছে বলে মামলা করেছেন। একই মানুষ একই দিনে দুই জায়গায় কীভাবে থাকে? বিষয়টি আমার মক্কেল আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন।
নাজমুলের আইনজীবী জানান, দীর্ঘদন ধরে নাজমুলকে উত্যক্ত করছিল পাখি। গত ১৫ অক্টোবর নিজেকে নাজমুলের স্ত্রী দাবি করে তার বাড়িতে অবস্থান নেয় সে। ১৯ অক্টোবর আবার বাবার বাড়ি ফিরে যায়।
নাজমুল আকন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মো. জালাল আকনের ছেলে ও পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। অভিযুক্ত ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজীপুর এলাকার আবদুল আউয়ালের মেয়ে।
জানা গেছে, নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসে থাকেন। পাখি দীর্ঘদিন ধরে তাকে মোবাইল ও ফেসবুকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নাজমুল এতে রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে পাখি ও তার লোকজন। পরদিন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ৭-৮ জন ব্যক্তি জোর করে তাকে একটি নীল কাগজে সই করতে বাধ্য করে। ধারণা করা হচ্ছে- এই কাগজ দিয়ে কাবিন করা হয়েছে।
আদালতে দেওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি কক্ষে পাখির বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন। পেছন থেকে নাজমুলের ঘাড় এক ব্যক্তি চেপে ধরে রেখেছে। সেখানে আরো একজনকে উপস্থিত দেখা যায়। ওই সময় পাখিকে নীল কাগজে সই করতে দেখা যায়। সই গ্রহণের পর নাজমুলকে মিষ্টি খাইয়ে দিলে নাজমুল তা মুখ থেকে ফেলে দেন।
#ডেইলি বাংলাদেশ