সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির করা মানহানির মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আজ রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জেল হোসেন এ জামিনের আদেশ দেন।
একই আদালত গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক-শোতে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলা নিয়ে এ মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত মঙ্গলবার তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
ওই মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আজ রোববার জামিনের আবেদন করেছিলেন। তা আগামীকাল সোমবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রোববার সিএমএম কোর্ট জামিন মঞ্জুর করায় হাইকোর্টের আবেদন তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
মামলাটিতে গত বছর ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট মইনুল হোসেনের ৫ মাসের জামিন প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাকে মেয়াদান্তে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। সে অনুযায়ী চলতি বছর ১২ মে তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে নিয়মিত জামিন পান।
হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের আবেদন করলে গত ১৮ এপ্রিল আপলি বিভাগ ২ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। সে অনুযায়ী গত ৩ সেপ্টেম্বর তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন।
২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন মাসুদা ভাট্টি। মামলায় ওইদিনই সিএমএম আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
একই ঘটনায় গত বছর ২২ অক্টোবর রংপুর নগরীর মুলাটোল এলাকার মিলি মায়া বেগম বাদী হয়ে রংপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করেন। ওই মামলায় ওইদিন রাত পৌনে ১০টায় তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পর দিন তাকে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করার পর কারাগারে পাঠানো হয়। ওই সময় মাসুদা ভাট্টির মামলাসহ একই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন আদালতে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে ২৮টি মামলা হয়। সব মামলায় জামিন হাওয়ার পর চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি রাতে তিনি জামিনে মুক্ত হন।
গত ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ও সাখাওয়াত সায়ন্ত। একপর্যায়ে লাইভে যুক্ত হন আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এ সময় মইনুলের কাছে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কি না?’ মইনুল হোসেন এ প্রশ্নের জবাবে একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।