জামালপুরে প্রায় প্রতিদিনই মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ও শঙ্কায় রয়েছেন অন্যান্য মোটরসাইকেল মালিকরাও। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক মাসে জামালপুর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ধশত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। অতি প্রয়োজনীয় ও শখের মোটরসাইকেল চুরি যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চালকেরা। চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ চোরদের আইনের দ্রুত আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গত ১২ মার্চ দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাব ভবনের নিচে থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি করেন দুই ব্যাক্তি। এই চুরির ঘটনা ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়। এই ঘটনায় মোটরসাইকেলটির মালিক শিপলু চাকলাদার মামলা দায়ের করেছেন থানায়। শিপলু বলেন, ‘১২ মার্চ জামালপুর প্রেসক্লাব ভবনের ভিতর থেকে আমার পালসার মোটরসাইকেল চুরি হয়। ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও চোরকে এখনও ধরা হয়নি।’
শুধু শিপলু চাকলাদার নন। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ দুপুরে শহরের বোষপাড়া এলাকায় ঠিকাদার তারিফ হোসেনের বাড়ির নিচে থেকে তার মোটরসাইকেল চুরি হয়। নিজের অতি প্রয়োজনীয় ও শখের মোটরসাইকেলটি হারিয়ে অনেকটাই বেকায়দায় রয়েছে ঠিকাদার তারিফ।
তারিফ হোসেন এই বলেন, ‘মোটরসাইকেল আসলে একটা প্রয়োজনীয়, শখের জিনিস। আমার মোটরসাইকেলটা কিছুদিন আগে চুরি হয়ে গেছে। এর জন্যে আমি সঠিক সময়ে কোথাও যাইতে পারি না। কাজ কর্ম ঠিক মত করতে পারতাছি না। প্রশাসনের উচিৎ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা।’
একজন সাধারণ মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘গত একমাস যাবত জামালপুরে যে পরিমাণ গাড়ি (মোটরসাইকেল) চুরি হইছে। তা অকল্পনীয়। আমরা সাধারণ বাইকার যারা আছি দৈনন্দিন কাজের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। তারা মোটরসাইকেলটি কোথাও রেখে শান্তি পাই না। আতঙ্কগ্রস্থ থাকি যে, কখন কে নিয়ে যায়। প্রশাসন এই জায়গায় কেন ব্যর্থ হইতাছে আমি বুঝতেছি না। কেন এদেরকে ধরতে পারতেছে না? তা আমরা বুঝতাছি না।’
আরেক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘জামালপুরে দীর্ঘ এক মাসে যে পরিমাণ মোটরসাইকেল চুরি হইছে, আমরা তো আতঙ্কের মধ্যে থাকি। এখন মোটরসাইকেল কোথাও রেখে নির্ভয়ে থাকতে পারি না। মোটরসাইকেল নিয়ে সবসময় আমাদের দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হয়।’
জামালপুরের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘জামালপুরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র সম্প্রতি সময়ে প্রতিদিন প্রায়ই প্রকাশ্য দিবালোকে মোটরসাইকেল চুরি করছে। আমাদের দাবি, জামালপুরে এই যে মোটরসাইকেল চুরির ভয়াবহ উৎসব শুরু হয়েছে, তা দ্রুত রোধ করা হোক।’
এসব বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই চক্রকে ধরার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং এই চেষ্টার ফসল হিসেবে আমরা ইতোমধ্যেই তিনটি চক্রকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। ৭টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬ জনকে এবং ১২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া আমাদের বিশেষ অভিযান চলমান আছে। বিভিন্ন জায়গায় আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি।’