নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বন্ধ হলেই জেলা ও উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাবে অপরাধ। এর ফলে বেড়ে যাবে জনদুর্ভোগও। মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯, একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইনের আওতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রায় শতাধিক আইন, অধ্যাদেশ ও আদেশের বিচারাধিকার প্রাপ্ত হন। এই আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুই বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং সংশ্লিষ্ট আইন মোতাবেক জরিমানার শাস্তি দিতে পারেন। এ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বালু উত্তোলন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে আনে, ইভটিজিং স্কুলগামী মেয়েদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করে, পরীক্ষার হলে নকল প্রতিরোধ করে, বিদুৎ ও গ্যাসের চুরি প্রতিরোধ করে, ইলিশ মৌসুমে মা ইলিশ নিধন বন্ধ, খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল প্রতিরোধ করে, জুয়া প্রতিরোধ করে, ভুয়া ডাক্তার ঠেকায়, খাস জমি রক্ষা করে, নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে, সমাজে দ্রুত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা সহ অসংখ্য অপরাধ দমনে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক ভুমিকা রেখে দেশে এবং দেশের বাহিরে প্রশংসিত হয়েছেন । কিন্তু এখন নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রিটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট বন্ধ হলে এসব অপরাধ সংঘটনের সঠিক তথ্য থাকলেও কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে না স্থানীয় প্রশাসন। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মোবাইল কোর্ট আইন গ্রহণ করেছে। এটি খুব ইফেকটিভ আইন। এতে তাৎক্ষণিক প্রতিকার পায় জনগণ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বন্ধ হলে দেশে ইভটিজিং, মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অবৈধ ওষুধ বিক্রি, প্রকাশ্যে জুয়া খেলা, প্লাস্টিক ব্যাগের,অবৈধ ভাবে পাহাড়ে গাছ কাটা, মৌসুমি ফল গুলোতে ক্ষতিকর ফরমালিন ও কার্বাইড মেশানো, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যে ভেজাল বৃদ্ধি, মোটরযান অধ্যাদেশ পরিপন্থী কাজ, পরিবহন খাতে নৈরাজ্য, অবৈধ যাত্রী বহন, নিষিদ্ধ নোট বই বিক্রি, পাবলিক পরীক্ষায় নকল, ভূয়া ডাক্তার দের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি, অবৈধ ঔষধে বাজার দখল, ওজনে কম দেওয়ার প্রবণতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট নিম্নমানের ও বাসী খাবার বিক্রি, ভেজাল দুধ বিক্রি, অবৈধভাবে এসিডের ব্যবহার, জাটকা ও মা ইলিশ নিধনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচার করা যেত; দ্রত শাস্তি পেত অপরাধীরা। কিন্তু মোবাইল কোর্ট বন্ধ হয়ে গেলে বেপরোয়া হয়ে উঠবে অপরাধীরা। তাই জনস্বার্থে নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রিটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট চালু রাখা হোক।
লেখক-জাহিদুল হক মনির
অর্নাস ৩য় বর্ষ রাষ্ট্রবিজ্ঞান
নাজমুল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়
নালিতাবাড়ি,শেরপুর।