শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নারী সক্রান্ত গ্রাম্য শালিশকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলেকে মারধর করার অভিযোগে চেয়ারম্যানের দায়ের করা মামলায় আবদুল মান্নান নামে নয়াবিল ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২৮ মে) সকালে গ্রেফতারকৃতকে আদালতে সোপর্দ করার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলের মারধরের ঘটনায় শনিবার থানা পুলিশ ওই ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করে।
সুত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের মায়াঘাসি গ্রামের সুরুজ মিয়া তারই ভাতিজার স্ত্রীকে উত্যক্ত করার একপর্যায়ে ভাতিজার স্ত্রী চেতনানাশক ওষুধ খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরদিন এই বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে শালিসের মাধ্যমে সুরাহার লক্ষে রাতে রামচন্দ্রকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নেওয়া হয় সুরুজ মিয়াকে। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই ঘটনা প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হলে ইউপি চেয়ারম্যান খোকা এর সুরাহা করতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট জুরিবোর্ড গঠন করেন। পরে জুরিবোর্ড জরিমানা ধার্য করে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষকে মিমাংসা করে দেন। এই শালিস সুরুজ আলী মেনে না নিয়ে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকাসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে শেরপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। একই সাথে সুরুজ মিয়ার ভাতিজা রাসেলও তার স্ত্রীকে উত্যক্ত ও কু-প্রস্তাবের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সুরুজের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৬ মে) বিকেলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের চারআলী বাজার এলাকায় নয়াবিল ইউপির ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সুরুজ মিয়ার সমন্ধি আবদুল মান্নানসহ কয়েকজন মিলে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার ছেলে রাজিবের পথ আটকে তাকে মারধর করে। এতে খোরশেদ আলম খোকা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করলে ইউপি সদস্য আবদুল মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা জানান, অভিযুক্ত সুরুজ মিয়া তার নিজের দোষ স্বীকার করেছে। আর এর বিচার করেছে শালিসের জুরিবোর্ড। কিন্তু তারা আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করেছে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার ছেলে রাজিবকে মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় ইউপি সদস্য মান্নানকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একই সাথে অন্য আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।