দেশের মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে এবং চিকিৎসক সংকট নিরসনে ৩৯তম বিশেষ (স্বাস্থ্য) বিসিএসের মাধ্যমে ডাক্তারের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। বিশেষ এ বিসিএসে চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ৪ হাজার ৪৪৩ জন ডাক্তার। কিন্তু ভেরিফিকেশনে ‘আপত্তি’ থাকায় এবার আটকে গেল ৩৪৯ ডাক্তারের নিয়োগ। জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়া কোনোমতেই কাম্য নয়।
চিকিৎসা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। জনসংখ্যার এ দেশে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক। সময়মতো তাদের নিয়োগ দেওয়া না হলে এর নিশ্চিত নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জনস্বাস্থ্যে। নীতিনির্ধারকদের এটি অনুধাবন করা উচিত। এ দেশে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারি চিকিৎসকরাই ভরসা। বিপুল অর্থ ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার সুযোগ অধিকাংশ মানুষের নেই। তাই সরকারি চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে গড়িমসির সুযোগ নেই। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সরকার যদি তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে না পারে, তা হলে মেধাবীরা চিকিৎসা শিক্ষায় উৎসাহ হারাবেন, এটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে আটকে পড়ারা নিয়োগ পেতে দপ্তরে দপ্তরে ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন। নিয়োগ পেতে তারা প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন। তার পরও থেমে আছে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় তাদের অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও আটকে পড়েছেন। কিন্তু তারা ভেরিফিকেশনে নিয়োগ আটকে যাওয়ায় বিব্রত। তারা আসলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কিনা, এ নিয়েও গুঞ্জন চলছে এলাকাবাসীর মধ্যে। এটি তাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক ও হতাশার। কোনো রাজনৈতিক হয়রানি না করে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানকে নিয়োগ দেবেন। কোনোভাবেই যেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাদ না পড়ে। যাদের নিয়োগ আটকে গেছে, তাদের বেশিরভাগেরই যাচাই-বাছাই শেষে ১০ ডিসেম্বর সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা মনে করি। আশা করি, আটকে যাওয়া ডাক্তাদের নিয়োগের ব্যাপারে জনপ্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে। এ ধরনের জটিলতা দ্রুত দূর করা হোক।