শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি মামলার অন্যতম আসামি কানন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১৪ জামালপুরের আভিযানিক দল। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামি কাননকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ৯ মাস পূর্বে ভিকটিমের স্বামী জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া চলে যান। স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর হতে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে থাকতেন। এমতাবস্থায় আসামি রাজিবের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের জেরধরে আসামি রাজিব অপর আসামি কানন মিয়ার সাথে পরামর্শ করে ভিকটিমের স্বশুর বাড়ীতে দেখা করতে আসেন। গত বছরের ১১ আগষ্ট তারিখ রাত সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া গ্রামের শ্বশুর বাড়ীর টিনের দুচালা বসত ঘরের মেঝেতে আসামি রাজিব ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষন করেন। এসময় অপর আসামি কানন মিয়া সুকৌশলে ঘরে ঢুকে তাদের নগ্ন অশ্লীল ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারন করেন। ওই ভিডিও চিত্র আসামি কানন মিয়া প্রধান আসামি রাব্বির মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেন। এরপর হতে আসামি রাব্বি ও আসামি কানন মিয়া দুজনেই ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদানসহ কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন। তাদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। গত বছরের ১০ নভেম্বর ছেলে সন্তানটি হঠাৎ মারা গেলে ভিকটিমসহ সকলেই তাদের গ্রামের বাড়ীতে চলে আসেন। বাড়ীতে থাকাবস্থায় আসামি রাব্বি ও আসামি কানন মিয়া ভিকটিমকে পূর্বের ধারনকৃত ভিডিও চিত্র দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন।
ঘটনার দিন গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বেলা ৩ টার দিকে আসামি কানন মিয়া ফোন করে বলেন তাদের মোবাইল থাকা পূর্বে ধারনকৃর অশ্লীল ভিডিও চিত্র ভিকটিমের সামনে ডিলিট করে দেওয়া হবে। তাই তাকে আসামি রাব্বির বাড়ীতে আসতে হবে। সরল বিশ্বাসে কানন মিয়ার কথামতো রাব্বির বসতঘরে গেল ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দুইজনেই পালাক্রমে ধর্ষন করেন। এই দৃশ্য আবার আসামি কানন মিয়া তার মোবাইলে ধারন করেন। এ বিষয়ে কাউকে কোন কিছু না বলার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ছেড়ে দেয় তাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের অশ্লীল ভিডিও চিত্র আসামিদ্বয় এলাকার বিভিন্ন লোকের মোবাইলে ছড়িয়ে দিলে বাদীর ছোট ভাই নূরুল আমিন ওই ভিডিও চিত্রটি দেখেন। পরে ঘটনা জানালে ভিকটিমের বাবা এ নিয়ে নালিতাবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঘটনার পর থেকে এই আসামী গ্রেপ্তার এড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।