নাঈম ইসলাম: ব্যস্ততার গন্ডি, নিয়মের বেড়াজাল আর যান্ত্রিক চাপের মধ্যে বাইরে কোথাও পরিদর্শনে যাওয়ার আয়োজন স্বস্থি ও হিম বাতাস বয়ে দেয় মনে। বর্ষার আগমনে সকল র্জীণতা কাটিয়ে প্রকৃতি ফুলে ফুলে সেজে উঠেছে। আর ঠিক সময়ে শেরপুর সরকারী কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে সোয়াদ এগ্রো লিমিটেডে পরিদর্শন করা হয়।
৫ জুলাই সকাল ৯টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হাজির হতে থাকেন কলেজের সামনে। অপেক্ষা কাটিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ৮টি ইজিবাইক এসে পৌঁছায়। ইজি বাইকে বসতেই উল্লাস ছড়িয়ে পরে সবার মাঝে। মৃদু মৃদু গতিতে এগিয়ে চলছে গাড়ি। সঙে আড্ডা আর হাসি ঠাট্টার উৎসব ছড়িয়ে পরে। শিক্ষার্থীদের মন বেশিক্ষণ আটকে থাকেনি এগ্রোর রেস্ট হাউজের খাটিঁ দুধের চায়ের কাপে তোলা আড্ডার ঝড়।তাদের মিতালি এখন ডেইরি ফার্মের সঙে।
কখন যে বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেল বুজতেও পারেনি কেউ। দুপুরের খাবার গ্রহনের আগ মুহূর্তে সবার চোখে যখন ক্লান্তির ঘোর, তখন প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহানা আখতার ও প্রভাষক শামীমা রহমান সবাইকে ডেইরি ফার্মের গাভী, ষাড়, বকনা এবং এদের আবাস-স্থল পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। মুক্তি যুদ্ধের জীবন্ত সাক্ষী বহনকারী গ্রাম সূর্যদীতে গড়ে উঠেছে সোয়াদ এগ্রো লিমিটেড। এখানে প্রায় দেড় শতাধিক গরু রয়েছে। সকালে ও বিকালে প্রায় দুইশ লিটার দুধ সোয়াদ এগ্রো বিক্রি করে। ভেটেনারী সার্জন ডাঃ রেজুয়ানুল হক ভুইয়াঁ ও ডাঃ বিপ্লব কুমার পালের তত্বাধানে এখানে চিকিৎসা দেয়া হয়। অর্ধশতাধিক কর্মচারী রয়েছে তাদের। এরপর দুপুরের খাবার শেষে প্রদর্শক আবু রাশেদ এগ্রোর গাভীদের খাদ্য ব্যবস্থা পদ্ধতি ঘুরে ঘুরে দেখান। এ সময় সহযোগিতা করেন ল্যাব সহকারী আবুল কালাম।
সহকারী অধ্যাপক সাহানা আখতার বলেন, প্রাণীবিদ্যার শিক্ষার্থীদের জন্য সোয়াদ এগ্রো একটি আদর্শ স্থান। এখান থেকে তারা গবাদি পশুর আচার আচরণ, খাদ্যাভাস, উপকারিতা, অপকারিতা বিভিন্ন বিষয়াদির বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবে।
সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির জেলা সেক্রেটারী ও একই বিভাগের ছাত্র নাঈম ইসলাম বলেন, এই এলাকাটি একাত্তরে গণহত্যা ও লুটপাট, পৌর শহর হতে বেশ দূরে হওয়া আরও নানাবিদ কারনে অন্যান্য গ্রাম থেকে পিছিয়ে পড়া। তবে সোয়াদ এগ্রো গড়ে ওঠার পর থেকে গ্রামের শ্রমজীবি মানুষরা এখানে কর্ম করতে পারছে। অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
সবমিলিয়ে শিক্ষা জীবনে এগ্রোতে কাটানো একটা দিনের স্মৃতি মনের ক্যানভাসে অম্লান হয়ে থাকবে। সফর শেষে বিকালের সূর্যকে সঙ্গী করে নিয়ে পথচলা বারবার আবগোল্পূত করে। গাড়িতে উঠে কেউ কেউ এক-দুই কলি অবিন্যস্থ গানের সুর তুলে। এরপর শিক্ষক শিক্ষার্থী কবিতা কৌতুকে ভরা আনন্দ উল্লাসে গাড়ি এসে থামে করেজের সামনে। ঠিক তখনই মনে পড়ে, এবার ঘরে ফেরার পালা।
(শে/টা/বা/জু)