জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কোভিড-১৯ টিকা কার্ডের গোপন তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে গোপনে বাণিজ্য করে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। এই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গ্রেফতারকৃতরা হলো নির্বাচন কমিশনের ডাটাএন্ট্রি অপারেটর মোঃ জামাল উদ্দিন ও লিটন মোল্লা। গত মঙ্গলবার লিটন মোল্লাকে বাগেরহাট থেকে ও জামাল উদ্দিনকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগের পৃথক দুইটি টিম।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান, বিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নজরদারী করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। দীর্ঘদিন তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ জামাল উদ্দিন নির্বাচন কমিশনে ডাটাএন্ট্রি অপারেটর। তার সহায়তায় লিটন মোল্লা নির্বাচন কমিশন সার্ভার থেকে এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতো।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অর্থের বিনিময়ে জাল এনআইডি প্রদান, হারানো এনআইডির কপি তৈরি, এনআইডির তথ্য সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন, কোভিড-১৯ এর টিকা কার্ড ও টিন (TIN) সার্টিফিকেটের কপি তৈরি করে সরবরাহ করতো। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকার বিনিময়ে অনলাইনে এনআইডি ও অন্যান্য সনদ প্রদানের বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ধরনের কাজের বিনিময়ে তারা কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতো। হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করতো। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত লিটন নিজের তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব জাল সনদ তৈরি করে গ্রাহকদের প্রদান করতো এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করতো। এভাবে তারা প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তারা আদালতের আদেশে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
#ডিএমপি নিউজ