প্রকৃতি শীতের আগমন বার্তায় অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। এসময় গায়ে গরম কাপড় জড়িয়ে ধোঁয়া উঠা ‘ভাপা’ পিঠার স্বাদ পেতে কে না ভালোবাসে। তাইতো ভাপা পিঠার কদর বাড়ছে দিনের পর দিন। শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোর হলেই দেখা যায় ভাপা পিঠার দোকান। আবার কখনো শোনা যায় ‘ভাপা লাগবে ভাপা, ‘গরম গরম ভাপা…’। তাইতো সকাল-সন্ধ্যায় “আগাম শীতের হাওয়ায় ভাসে ভাপা পিঠার ঘ্রাণ”।
জানা যায়, গরম পানির ভাপে এই পিঠা তৈরি করা হয়। এজন্য এর নাম হয়েছে ‘ভাপা পিঠা’। তবে কোন কোন জায়গায় একে ধুপি পিঠাও বলে। গরম পানির ধোঁয়ায় তৈরি বলে ‘ধুপি পিঠা’। মাটির হাঁড়ি ও মাঝ বরাবর বড় ছিদ্র করা মাটির ঢাকনা লাগে ভাপা পিঠা তৈরিতে। হাঁড়িতে ছিদ্র করা ঢাকনা লাগিয়ে আটা গুলিয়ে ঢাকনার চারপাশ ভালোভাবে মুড়ে দিতে হয়; যাতে করে হাঁড়ির ভেতরে থাকা গরম পানির ভাপ বের না হতে পারে।
ছোট গোল বাটিজাতীয় পাত্রে চালের গুঁড়া খানিকটা দিয়ে তারপর খেজুর অথবা আখের গুড় দিয়ে আবার কিছু চালের গুঁড়া দিয়ে বাটিটি পাতলা কাপড়ে পেঁচিয়ে ঢাকনার ছিদ্রের মাঝখানে বসিয়ে দিতে হয়। ২/৩ মিনিট ভাপে রেখে দিলে সিদ্ধ হয়ে তৈরি হয় মজাদার ভাপা পিঠা।
সোমবার শহরের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য ভাপা পিঠার দোকান। শ্রীবরদীর চৌ-রাস্তা মোড়, পশ্চিম বাজার, কলাকান্দা, উত্তর বাজার, বটতলাসহ শহর জুড়েই রয়েছে এসব ভাপা পিঠার দোকান। এসময় পশ্চিম বাজার মহল্লার পিঠা বিক্রেতা মমিন মিয়ার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, গত বছরও ৫ টাকায় পিঠা বিক্রি করেছি। এবারো বিক্রি করছি। তবে এখন আর তা পারছি না। সবকিছুর দাম বেশি।
উত্তর বাজার এলাকা থেকে শপিং করে ফেরার সময় পিঠা কিনতে দেখা যায় জোনাকি টেলিকম কোম্পানীর সত্বাধিকার কিং শাওনকে। তিনি বলেন, আমি ভাপা পিঠা কিনেছি সন্ধ্যায় খাওয়ার জন্য। আর চিতই পিঠা কিনেছি দুধ পিঠা তৈরির জন্য।
এসময় শীতের পিঠাকে ঘিরে আয়োজন হয়ে থাকে ‘পিঠা উৎসবের’। এই পিঠা উৎসব বাঙালির বারো মাসের তের পার্বণেরই একটি অংশ। নভেম্বর থেকে শুরু করে ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত শহরে যতদিন প্রকৃতিতে শীত থাকবে; ততদিনই দেখা মিলবে এই ভাপা পিঠা