ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে একটি মৃত বন্য হাতি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের ছোট গজনী থেকে ওই মৃত হাতিটি উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক ছোট গজনী এলাকার গারো পাহাড়ে মৃত পুরুষ হাতি পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়দের কাছে থেকে সংবাদ পেয়ে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বন বিভাগ এবং বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ মৃত বন্য হাতি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত হাতিটি পুরুষ জাতের। এর বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ বছর।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম ফায়েজুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে হাতিটির সামনের ডান পায়ের হাঁটুর প্রায় চার ইঞ্চি নিচে একটি দুই ইঞ্চি পরিমাণের একটি কালো দাগ পাওয়া গেছে। তবে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে (সিডিআইএল) ল্যাবে পরীক্ষার পর হাতিটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মেরাজ উদ্দিন হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেন। তিনি হাতি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেছেন।
অপরদিকে পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ হিউম্যানিটি, ইন্টারাপ্টেড নের্চা এন্ড এন্ভাইরন্মেন্ট্ (শাইন্) এর সাধারণ সম্পাদক মুগনিউর রহমান মনি জানান, সীমান্ত এলাকায় হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাচ্ছে সরকার বনবিভাগের মাধ্যমে। এরপরেও ফসল রক্ষার নামে স্থানীয়রা নানা পদ্ধতিতে নির্মমভাবে গারো পাহাড়ে বন্য হাতির স্বাভাবিক বিচরণ বাধাগ্রস্ত করে চলেছে এবং জিআই তারে বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিষ প্রয়োগ করে হাতি হত্যা করছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বন বিভাগের জনসচেতনতা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা দরকার। তিনিও হাতি হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।