শেরপুর নালিতাবাড়ীতে ফসলের ক্ষেত থেকে হগ বেজার বা গোরখোদক নামে বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রজাতির একটি বন্যপ্রাণি উদ্ধারের পর গারো পাহাড়ে অবমুক্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের ধোপাকুরা গ্রামের একটি ধান ক্ষেতে থেকে এটি উদ্ধারের পর বিকেলে গারো পাহাড়ের মধুটিলা ইকোপার্ক এলাকায় অবমুক্ত করা হয়।
জানা গেছে, শনিবার সকালে একদল কৃষক উপজেলার ধোপাকুড়া গ্রামের একটি ধান ক্ষেতে কাজ করতে যান৷ এসময় হঠাৎ করে ক্ষেত থেকে বিরল প্রজাতির এ প্রাণিটি বেড়িয়ে আসলে কৃষকরা ধাওয়া করে ধরে ক্ষেতের পাশের একটি বাড়ীতে বেঁধে রাখে৷ খবর পেয়ে স্থানীয় উৎসুক লোকজন প্রাণিটিকে দেখার জন্য ওই বাড়ীতে ভীড় করেন৷ পরে বিষয়টি স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্য ও বনবিভাগের নজরে আসলে তারা গোরখোদকটি উদ্ধার করেন৷
স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্য রবিউল ইসলাম মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে ওই প্রাণিটি দেখতে গিয়ে দেখি একটি বাড়ীতে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। প্রাণিটি কোথা থেকে কীভাবে ধান ক্ষেতে এসে তা বাড়ীর মালিক বলতে পারছেন না। স্থানীয়রা এর আগে এই প্রাণি কখনও দেখেননি।
ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, খাদ্যের সন্ধানে হগ বেজারসহ নানা বন্যপ্রাণি লোকালয়ে চলে আসে। গ্রামের মানুষ ওই বন্য প্রাণিকে আটক করে আমাদেরকে খবর দেন। আমরা খবর পেয়ে প্রাণিটিকে উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছি।
এ ব্যাপারে শেরপুরের বন বিভাগের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার জানান, অবমুক্ত করার এই প্রাণির নাম হলো হগ বেজার। অনেকে এটিকে গোরখোদকও বলে থাকেন। এটি একটি নিশাচর স্তন্যপায়ী প্রাণি। সচরাচর এটির দেখা মেলে না। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এটি সংকটাপন্ন বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণি। উদ্ধার হওয়া হগ বেজারটি স্বাভাবিক ও সুস্থ অবস্থায় শনিবার বিকেলে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মধুটিলা ইকোপার্ক এলাকার গহীন বনে অবমুক্ত করা হয়েছে৷ এছাড়া এমন বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে বন বিভাগের কঠোর নজরদারী রয়েছে বলে জানান তিনি।