নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় সুদের টাকা না পেয়ে হিরণ মিয়া নামে একজনের বসতঘর ভেঙে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঘরটি ভেঙে নেন মহাজন আরিফুল ইসলাম। উপজেলার রোয়াইলবাড়ী আমতলা ইউনিয়নের পাথাইরকোনা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় ছয়দিনেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাথাইরকোনা গ্রামের হিরণ মিয়া ২০ শতাংশ সুদে একই গ্রামের আরিফুল ইসলামের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেন। বহুদিন সুদ দেওয়ার পর ২৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ১৬ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য হিরণকে চাপ দিয়ে আসছিলেন আরিফুল। এই টাকা ছাড়াও অন্য ঋণের চাপে মা হামিদা আক্তারকে ঘরে রেখে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যত্র চলে যান হিরণ। এরইমধ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে হিরণের দোচালা টিনের ঘর ভেঙে নেন আরিফুল। তার সঙ্গে ঘর ভাঙতে যান রঞ্জু মিয়া, বাবুল মিয়া, শিপুল মিয়া, শিরিন আক্তার ও কাঠমিস্ত্রি শাহজাহান মিয়া।
শুক্রবার বিকেলে হামিদা আক্তার বলেন, আমি ঘরেই ছিলাম। আরিফুলকে আমার ছেলের বসতঘর না ভাঙার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভেঙে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।
ওই গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া বলেন, পাখির বাসাও ভাঙে না মানুষ। কিন্তু ঋণের টাকার জন্য হিরণের বসতঘরটি ভেঙে নিয়ে গেছে আরিফুল। এই ঘটনার বিচার হওয়া দরকার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল মিয়া জানান, কোনোপক্ষই তাকে ঘটনাটি জানায়নি। তবে শুনেছেন সুদের টাকা দিতে না পারায় আরিফুল হিরণের বসতঘর ভেঙে নিয়েছেন। তিনিও তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার বিচার চান।
হিরণের ভাই রুবেল মিয়া দাবি করেন, আরিফুলসহ যারা তার ভাইয়ের ঘর ভেঙে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও এখনো থানায় মামলা হয়নি।
তবে সুদের টাকার জন্য ঘর ভেঙে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরিফুল ইসলাম। তার দাবি, তার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন হিরণ মিয়া। তিনি টাকা ফেরত দিতে না পেরে ৪০ হাজার টাকা মূল্য ধরে তার বসতঘরটি বিক্রি করেছেন।
কেন্দুয়ার পেমই পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন বলেন, মামলা নেওয়া হচ্ছে না এ কথা ঠিক নয়। আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে সে বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।