দুর্গম পথে ঘাম ঝরানো ট্যুর হিসেবে বান্দরবানের কেওক্রাডং জনপ্রিয় গন্তব্য। দেশের পঞ্চম উঁচু পাহাড় এটি। দু-তিন দিন হাতে সময় নিয়ে অসম্ভব সুন্দর কিছু মুহূর্ত আর দুর্দান্ত রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক যান সেখানে।
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ১৭২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই শৃঙ্গটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। মালিকের নাম লাল মুন থন হাওং। স্থানীয়ভাবে ওনি লালা বম নামে পরিচিত। এরা বম উপজাতীর। বর্তমানে লাল মুন জীবিত নেই, তার পরিবারের অন্যান্যরা সবকিছু দেখাশোনা করেন। পর্যটকদের কাছে এটা বম বাড়ি নামে পরিচিত।
চূড়ায় আগে থেকেই দুটি কটেজ ছিল তাদের। এ বছর সংযোজন করেছে মূল চূড়া থেকে একটু দূরে আরেকটা নতুন কটেজ। সবুজ ও লাল রঙের ছবিটা সেই কটেজেরই। এত উঁচু পাহাড়ে এরচেয়ে মনোমুগ্ধকর কটেজ দেশে আর আছে কি-না জানা নেই। দূর থেকে কটেজটির দিকে তাকালেই কেমন যেন মায়া জন্মে। ইচ্ছে জাগে এই কটেজে কয়েকটা জোছনা-রাত কাটানোর।
তবে এই কটেজে বিদ্যুৎ নেই, সোলারের সাহায্যে জ্বলে লাইট। বিছানা নেই, তোশক বিছিয়ে দেয়া হয় বাঁশের মাচার উপরে। কোনো রুমের সঙ্গেই সংযুক্ত বাথরুম নেই, টয়লেট কটেজের বাইরে। কোনো রুম সার্ভিস পাবেন না সারাদিন। প্রথমে একবার যাবতীয় জিনিস গুছায়ে দিয়ে চলে যাবে কর্তৃপক্ষ। কটেজে রুম জনপ্রতি ৩শ’ টাকা। সদস্য বেশি হলেও সমস্যা নেই, এক রুমে অনায়াসে ১০ জন থাকা যায়।
বম বাড়ি লাগোয়া একটা রেস্তোরাঁও আছে। সেখানে একদম প্রাকৃতিকভাবে রান্না করা নানা জাতের খাবার পাওয়া যায়। বেশি ঝাল দেয়া দেশি মুরগি, আলুভর্তা, পেঁপের সালাদ, লাউয়ের তরকারি, জুমের সবজিসহ আরও নানান রকমের পদ থাকে সেখানে। রোজকার ট্রাভেলারদের খাবার-দাবারের আয়োজন এখানেই হয়। বিভিন্ন প্যাকেজে ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে খাবার পাওয়া যায়।

কেওক্রাডংয়ের সেই কটেজ
বান্দরবান শহর থেকে কেওক্রাডং যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে রুমা বাজার। তারপর রুমা বাজার থেকে গাইড নিয়ে বগালেক হয়ে কেওক্রাডং। একদিনে বান্দরবান থেকে কেওক্রাডং পৌঁছানো একটু কষ্টকর হয়ে যাবে। সাধারণত পর্যটকরা প্রথমদিন বগালেকে এক রাত থেকে তার পরদিন সকালে কেওক্রাডং ভ্রমণে যায়। বগালেক দেখা ও সেখানে থাকা আপনার কেওক্রাডং ভ্রমণ আরো সুখময় করে তুলবে।