কালের স্বাক্ষী শ্রীবরদীর উজান জল কেশরায় বা মিরকি বিল। যেখানে ছিল অগাধ পানি আর দেশীয় প্রজাতির প্রচুর পরিমাণ মাছ। কালের আবর্তে আজ শুধুই ধুধু ফসলের মাঠ। শত শত জেলে নৌকায় করে বছরের পর বছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। বিলের মাছ দিয়েই এ অঞ্চলের মানুষের আমিষের চাহিদা পুরণ হতে। বিলে শোভা পেত জাতীয় শাপলা আর পদ্ম।
বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কল কাকলি আর মাঝি মাল্লা ও জেলেদের জারি সারি ভাটিয়ালি গানে মুখরিত থাকতো বিল পাড়ের লোকজন। জ্যোøা রাতে বিলের দিকে তাকালে মনে হতো আকাশের তারকা আর শাপলা রুপালি রং ধারণ করে বিলের জলে একাকার হয়ে যেন ভাসছে। এমন দৃশ্য বিল পাড়ের মানুষের মন মুগ্ধ করতো। গ্রামের লোকজন হাট বাজার করতে ও আতœীয় স্বজনের বাড়িতে যেত এ বিলে উপর দিয়ে নৌকাযোগে। ব্যবসায়ীরা বড় বড় পাল তোলা নৌকায় করে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য আসতো এ বিল দিয়ে। এ বিলকে ঘিরেই শম্ভুগঞ্জ নামে নামে একটি গঞ্জ গড়ে ওঠেছিল যা আজ শ্রীবরদী নামে পরিচিত।
এ গঞ্জের উত্তর ও পশ্চিম পাশে সারিসারি বড় বড় নৌকা ভিড়ানো থাকতো। সে সময় এঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ পাট উৎপাদন হতো। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাঠ নৌকাযোগে এ গঞ্জে এনে বিক্রি করতো। কালের বিবর্তনে বিলটি আজ ভরাট হয়েছে। এখন বর্ষাকালেও এ বিলে পানি থাকে না। ইরি বোরো মৌসুমে বিল জুড়ে ধান চাষ করা হয়।
শ্রীবরদী পৌর শহরের উত্তর পাশ দিয়ে তাতিহাটি ও কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের মধ্যে এ বিলের অবস্থান। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ কিলোমিটার এবং পাশে প্রায় দেড় কিলোমিটার এ বিল। সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী এ বিলে খাস জমির পরিমাণ ছিল ১ শত ৬২ একর। বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিল পাড়ের লোকজন তাদের পজিশন মতো রেকর্ড ও দখল করে নিয়েছে এ বিলের জমি। এখনো ১ শত ২১ একর খাস জমি রয়েছে এ বিলে। যা বর্তমানে শুকনা মৌসুমে ফসলের চাষ হয়।