ইবাদতের জন্যই সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড রয়েছে। সম্পদহীন ব্যক্তি চাইলে হজ আদায় করতে পারবে না। আবার সম্পদশালী ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও হজ করতে পারবে না। তেমনি জাকাত আদায়ে রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। কিন্তু কোরবানি? আত্মত্যাগের মহান এ ইবাদত কার কার জন্য প্রযোজ্য?
আমরা জানি, জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ কোরবানি আদায় করতে হয়। এ দিনগুলোতে যারা নিত্য প্রয়োজনীয় সাংসারিক খরচ ছাড়া অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে তাদের ওপর কোরবানি আদায় করা আবশ্যক।
এ নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলো- সাড়ে ৭ তোলা/ভরি সোনা বা এর সমমূল্য কিংবা সাড়ে ৫২ তোলা/ভরি রূপা কিংবা তার সমমূল্যের সম্পদ থাকা। তবে কোরবানি আবশ্যক হতে এ পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ ১ বছর থাকা শর্ত নয়। শুধু উল্লেখিত তিন দিনের মধ্যে থাকলেই কোরবানি আবশ্যক।
কোরবানি সম্পর্কে যা জানা জরুরি
১. যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উল্লেখিত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি আদায় করা আবশ্যক।
২. পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের (খাদ্য-শস্য) দরকার; সে পরিমাণ থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলেও ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি করা আবশ্যক।
৩. পরিবারের সব সদস্যের যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকানা থাকে তবে সবার ওপরই কোরবানি করা আবশ্যক।
৪. গরিব ব্যক্তি যদি কোরবানির নিয়তে কোরবানির পশু ক্রয় করে তবে ওই ব্যক্তির ওপর কোরবানি সম্পন্ন করা আবশ্যক।
৫. কোনো ব্যক্তি স্বচ্ছল হোক অস্বচ্ছল হোক কোরবানির মান্নত করলে তা আদায় করাও আবশ্যক।
৬. কোনো ব্যক্তি যত বেশি সম্পদের মালিক হোক না কেন, তার জন্য একটি কোরবানিই আবশ্যক। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কোরবানি আদায়ের কোনো বিধান নেই। তবে একাধিক কোরবানিতে রয়েছে অধিক সাওয়াব।
সর্বোপরি, যাদের ওপর ফিতরা দেয়া আবশ্যক; তাদের জন্য কোরবানি আদায় করাও আবশ্যক। অতএব প্রত্যেক স্বাধীন, প্রাপ্ত বয়স্ক, নিসাব পরিমাণ সম্পদে মালিক, সুস্থ নারী-পুরুষের জন্য কোরবানি আদায় করা আবশ্যক।
সুতরাং সাংসারিক খরচ মেটানের পর জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেই কোরবানি করা আবশ্যক হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকদেরকে যথাযথভাবে কোরবানি আদায় করার মাধ্যমে তার নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।