রাজধানী ঢাকার পশ্চিম নাখালপাড়ার ‘রুবি ভিলা’ ভবনের ৫ম তলার জঙ্গি আস্তানায় গত ১২ জানুয়ারি রাতে নিহত অজ্ঞাত তিন জঙ্গির একজন হলেন মো: রবিন হাসান (১৭)। তিনি শেরপুর জেলার নকলা পৌর এলাকার কুর্শাবাদাগৈড় গ্রামের মৃত ফজর উদ্দিনের ছেলে ।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে, স্থানীয়রা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। সহজ সরল প্রকৃতির রবিন কি করে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ল এমন প্রশ্ন অনেকের।
স্থানীয়রা জানান , তিন ভাই এক বোনের মধ্যে রবিন ছিল ছোট । তিনি স্থানীয় নকলা শাহরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ফজর আলীর মৃত্যুর পর সংসারে অভাব অনটন দেখা দিলে ২০১৩ সালে বড় ভাই গোলাম মোস্তফার সঙ্গে চালের ব্যবসায় যুক্ত হন রবিন । গত ৭ জানুয়ারি দোকানের ক্যাশ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয় রবিন ।
এরপর খুঁজে না পেয়ে গত ২০ জানুয়ারি দুপুরে নকলা থানায় একটি জিডিও করেন তার বড় ভাই গোলাম মোস্তফা । ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে নিহত অজ্ঞাত দুই জঙ্গির একজনকে রবিন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন তার পরিবারের সদস্যরা। পরে নকলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকীর পরামর্শে তারা র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগে যোগযোগ করে রবিনের বড় ভাই গোলাম মোস্তফা রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে গিয়ে রবিনের লাশ শনাক্ত করেন।
গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি ও তার বোন জামাই মো: আলামীন মর্গে গিয়ে রবিনের লাশ শনাক্ত করেছেন। রবিনের লাশ শেরপুর নিয়ে আসার বিষয়ে তিনি জানান, র্যাব থেকে বলা হয়েছে লাশ গ্রহণের বিষয়ে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা। জনপ্রতিনিধি ও এলাকবাসীর সঙ্গে আলোাচনার পর এ বিষয়ে বলা যাবে।
রবিনের মা মালেকা বেগম বলেন, ভেবেছিলাম ছেলে ইজতেমায় গিয়েছে ফিরে আসবে সহসাই,এমন আশায় বুক বেঁধেছিলাম ।
রবিনের মেঝো ভাই হাফেজ রফিকুল ইসলামের দাবি বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক ।
প্রতিবেশীরা জানান, কাউকে কিছু না বলেই উধাও হয় রবিন ।
নকলা পৌরসভার প্যাােনল মেয়র আব্দুল আউয়াল সেলিম বলেন, সহজ ও সরল প্রকৃতির এমন ছেলের জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়া সত্যিই হতাশাজনক ঘটনা ।
শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে শেরপুর পুলিশ অবগত নন ।